कुल पेज दृश्य

गुरुवार, 29 सितंबर 2016

শিক্ষাই সমাধান

১.
শিক্ষা কি ? 
'যাবৎ বাঁচি তাবৎ শিখি' -ঠাকুরের এই যে কথা,সেটা আমাদের জীবনে সব সময় মনে রাখা প্রয়োজন। শিক্ষা কি ? কতকগুলি ভাবকে চরিত্রগত করা। আমাদের মধ্যে যে সম্পূর্ণতা আছে তাকে প্রকাশ করা। এর নাম শিক্ষা। 
আমরা স্বামীজীর কাছে শুনেছি, আমাদের ইচ্ছাশক্তিকে সংযতভাবে সংহতভাবে প্রকাশ করা- এমনভাবে, তা যাতে কার্যকর হয়-এটা শেখার নাম শিক্ষা। শিক্ষা মানে উপযুক্ত চরিত্রের অধিকারী হওয়া। শিক্ষা তাকেই বলে, স্বামীজী বলছেন, যাতে আমাদের চরিত্র গঠিত হয়, যাতে আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারি, যাতে আমরা উপযুক্ত মানুষ হয় আমাদের কর্তব্যবোধ সম্বন্ধে সচেতন হতে পারি, যাতে আমরা আমাদের কর্তব্য যথাযথ ভাবে পালন করতে পারি। এরকম উপযুক্ত হয় ওঠার নামই হচ্ছে শিক্ষা। 
শিক্ষা মানে কতকগুলো তত্ত্ব আর কতকগুলো তথ্য কোণ রকমে মাথার ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া, আর সেগুলো হজম হলো না, সারা জীবন জমা হয় থেকে গণ্ডগোল সৃষ্টি করলো মাথার মধ্যে -তাকে শিক্ষা বলে না, স্বামীজী বলছেন। স্বামীজী বলছেন বলেই শুধু নয়। এ সমস্ত কথাগুলো আমরা যদি শান্ত হয় চিন্তা করি তাহলে আমরাও বুঝতে পারবো। সত্যি তো. একে কি শিক্ষা বলে ? শিক্ষা মানে কি স্কুলে কলেজে যাওয়া ? শিক্ষা মানে কি শুধু কতকগুলো বিভিন্ন বিষয়ের তত্ত্ব মুখস্থ করা ? তাকে তো শিক্ষা বলে না। কতকগুলো মুখস্থ করলাম আর গিয়ে পরীক্ষার হলে উত্তরের পাতায় সেগুলো সব লিখে দিলাম -একে কি শিক্ষা বলে ? 
তা দিয়ে আমরা কতকগুলো সার্টিফিকেট পেলাম। সেই সার্টিফিকেটেগুলোর বাজার দর আছে। সেইগুলো বাজারে দেখিয়ে চাকরি পেলাম বা অন্য কিছু করলাম তা ভাঙিয়ে। একে শিক্ষা বলে না। শিক্ষা বলে, আগে যেগুলো বলা হলো সেগুলোকে, যার দ্বারা আমাদের ভেতরের শক্তি কে কাজে লাগাতে পারি উপযুক্তভাবে। উপযুক্তভাবে হলো কি না ? -কি করে বুঝবো ? না, যাতে আমাদের ব্যক্তিগত কল্যাণ হবে, মঙ্গল হবে, ভালো হবে। আমাদের জীবনটা সুন্দর হবে। অসহনীয় হয় ওঠবে না।  
২.
শিক্ষা ও সমাজ 
আমরা নানান শিক্ষা পদ্ধতির পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। নিজেদের শিক্ষিত বলে মনে করছি। কিন্তু আমাদের জীবন কি অনেক সময়ই দুর্বিষহ হয় ওঠছে না ? এমন মনোভাব, এমন চিন্তা, এমন কাজ, পরিবেশ কি আমরা নিজেরাই সৃষ্টি করছি না, যেটা খুব ভালো লাগছে না? আজকে যে সমাজে আমরা রয়েছি, সেখানে যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি, তার জন্যে কে দায়ী ? 
আমরাই তো করছি। যে পরিস্থিতি, যে সামাজিক আবহাওয়া আমাদের অনেক সময় অসহ্য লাগে, সেটা তো আমরাই সৃষ্টি করেছি। 
আমাদের শিক্ষা আমরা যেটা নিয়েছি , পেয়েছি সেটার ফলে এমন চিন্তা করছি এবং সেই চিন্তা এমন কাজে রূপ নিচ্ছে যাতে এই রকম পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের পরস্পরের মধ্যে ভাবের এবং অন্যান্য বিষয়ের আদান-প্রদান কি রকম হচ্ছে ? বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে আদান-প্রদান ভাব বিনিময় এবং অন্যান্য জিনিসের বিনিময়ের মধ্যে যেমন একটা সম্পর্ক আমাদের গড়ে ওঠছে যে পরস্পর পরস্পর কে অবিশ্বাস করছি, সন্দেহ করছি । চালাকি বা বুদ্ধি দিয়ে অন্যকে বঞ্চিত করে, অন্যকে ঠকিয়ে প্রত্যেকেই আমরা চেষ্টা করছি, আমি কি করে বেশি লাভবান হতে পারি। এইতো হচ্ছে আমাদের শিক্ষার ফল। একে কি শিক্ষা বলে ? এটা শিক্ষা নিশ্চয় নয়। 
শিক্ষা ঠিক মতন পেলে আমরা আমাদের ব্যক্তিস্বার্থ ততখানি দেখব যতখানি ব্যবহার করলে আমার কল্যাণ হয় এবং সমাজে আমার এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যে যে আদান-প্রদান সেটা যাতে উভয় পক্ষেরই লাভজনক হয়। পরস্পরের সহায়তা বা কল্যাণ -এটাই লক্ষ্য হবে। অন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্কেও আজ অন্তত  এই আদর্শের ভিত্তিতে গড়া হচ্ছে বলা হয়। স্বার্থের দ্বারা প্রনোদিত হয় আমরা কখনই সমাজের যথার্থ কল্যাণ করতে পারি না। সেজন্যে যদি সকলের স্বার্থ আমরা দেখতে চাই, রক্ষা করতে চাই, তাহলে নিজেকে নিঃস্বার্থ হতে হবে। স্বার্থপরতা কমাতে হবে। এবং এই স্বার্থপরতা কমানোটাই সবচেয়ে বড় শেখার জিনিস। যে শিক্ষায় আমাদের নিঃস্বার্থ করে না তা শিক্ষাই নয়। 
কাজেই এটা শিখতে হবে। 
৩.
শিক্ষা ও নৈতিকতা 
আমরা যদি নৈতিক হতে চাই, নীতিকে আমরা যদি কোন মর্যাদা দিতে চাই, তাহলে আমাদের নীতিপরায়ণ হতে হবে। শিক্ষার সেটা দিতে পারা চাই। নীতিটা কি ? নীতি কি নিয়ে ? এ বিষয়ে অনেক বিতর্ক আছে, অনেক মতান্তর আছে। এমন কি Ethics, নীতি-বিজ্ঞান, তাতেও বলা হয় যে, Absolute Morality (অনপেক্ষ নীতি) বলে কিছু নেই। 'Moral' (যা থেকে morality) শব্দটাই এসেছে ল্যাটিন 'mores' শব্দ থেকে; Mores মানে Customs, প্রথা, যেটা প্রচলন আছে।তাহলে প্রচলন যেটা আছে, যা প্রচলিত ব্যাপার সেটা হলেই moral হলো ? এই চলে আসছে। Ethics কথাটি গ্রীক শব্দ 'Ethos' থেকে এসেছে। Ethics মানে character বা চরিত্র বা আচরণ বিধি। আরও অনেক সমাজ দর্শনের তত্বে অনেক জায়গায় প্রায় সর্বজনস্বীকৃত ভাবে এই বলা হয়। কারণ, mores বা customs, প্রচলিত ব্যবস্থা বা প্রচলিত 'Behavior Standards', পারস্পরিক সম্পর্কের মোটামুটি প্রচলিত ধারা সব দেশে সমান নয়, সব কালে সমান নয়। দু' হাজার বছর আগে যা প্রচলন ছিল, যে সমস্ত রীতি-নীতিগুলো ছিল সেগুলি আজকে চলে না, যেটা এদেশে চলে সেটা অন্য দেশে চলে না, ইত্যাদি। কাজেই আমরা ধরে নিয়েছি, নীতি সব দেশে এক রকম হবে না। যেটাকে আমরা moral বা নীতি সমর্থিত বলে আমাদের দেশে মনে করি, সেটাকে হয়ত আর এক দেশ নীতিহীনতা বলে মনে করতে পারে। যেটা আমাদের দেশে নীতিবিগর্হিত বলে মনে করি, সেটা হয়ত আর এক দেশে অনৈতিক নয়। কাজেই এর কোন সাধারণ মান থাকতে পারে না।
এই বললে কিন্তু কি দাঁড়ায় শেষ অবধি ? না, নীতির তেমন কোন মানে নেই; মোটামুটি ব্যবহারের ধারা মেনে চললেই যথেষ্ট। 
তাহলে কোন ব্যবহারের ধারাটা মেনে চলা হবে ? না, দেশে 'যখন যেমন তখন তেমন' হলেই হল। 
কিন্তু ' যেখন যেমন তখন তেমন' -টা কি নীতি হতে পারে ? পারে না। নীতির কোন সংজ্ঞা তাই খুঁজে পাওয়া বড় শক্ত। 
৪.
নীতির সংজ্ঞা 
কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ নীতির একটা অর্থ দিয়েছেন, একটা সর্বজনীন সংজ্ঞা দিয়েছেন। নীতি জিনিস তাকেই বলা হবে যেটা নিঃস্বার্থ। আর যেটার মধ্যে স্বার্থই সব, সেটাই হচ্ছে নীতিহীনতা। 
এই সংজ্ঞাটিকে যদি একটু পরীক্ষা করে দেখি, আমরা দেখবো যে, এটা বহুকাল আগেও সত্য ছিল, আজও সত্য আছে, ভবিষ্যতেও সত্য থাকতেই হবে। ইটা এদেশেও সত্য, বিদেশেও সত্য, সব দেশে সত্য হতেই হবে। সমস্ত দেশে সকল কালে সমস্ত সমাজের মধ্যে ইটা ব্যবহার হতে পারে। এর কোন পরিবর্তন হবে না। এটাই হচ্ছে সর্বজনীন নীতির মান। যেটা স্বার্থপ্রণোদিত সেটা নৈতিক নয়।যেটা স্বার্থহীন বা পরার্থের দিকে নজর রেখে করা হয়, সেটাই হচ্ছে নৈতিক। এই জিনিসটা যে শিক্ষা আমাদের দেবে না, তা কি শিক্ষা হতে পারে ? 
কারন, যে শিক্ষা আমাদের নীতিপরায়ণ করবে না, নীতি বিষয়ে আমাদের দৃঢ় করবে না, সেটা যথার্থ শিক্ষা কখনো হতে পারে ? যে শিক্ষা তা না পারে সেটা কি শিক্ষা হল ? তা শিক্ষাই হল না। কারন, শিক্ষা হবে ভেতরে অনুপ্রবিষ্ট একটা চালক শক্তি। শিক্ষার কাজ ত' তাই, না কি ? শিক্ষা আমাদের সকল চলা-ফেরা, বলা, ব্যবহার -সব কিছুকে একটা বিশেষ দিকে গতি দেবে। একটা দিক ঠিক করে দেবে। কোন দিকে যাব সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 
যে কোন দিকে যাওয়া যায়, যে কোন করা যায় কি ভাবা যায়। প্রতি মুহূর্তে মানুষের জীবনের দৈনন্দিন, ব্যক্তিগত, সাংসারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক সমস্ত চিন্তা, বাক্য এবং কর্মকে শিক্ষা বিশেষ দিকে চালিত করবে, তাকে নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে। যে জিনিসটা তা করতে পারে তাকেই তো যথার্থ শিক্ষা বলে। 
৫.
নৈতিকতার সামাজিক প্রভাব 
সেই শিক্ষা আমাদের লাভ করার চেষ্টা করতে হবে যা আমাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শেখাবে, আমাদের সমস্ত শক্তি কে ঠিকভাবে ব্যবহার করতে শেখাবে। ঠিকভাবে ব্যবহার করতে শিখাবে মানে ? ঠিক-বেঠিক কি তা বুঝতেও শিখাবে ! ঠিক কোনটা কি করে বুঝবো ? যেটা নীতির দ্বারা সমর্থিত তাকেই ঠিক বলি, যেটা নীতিবিগর্হিত তাকেই বেঠিক বলি। 
ঠিক মানে হচ্ছে, যেটা নীতির দিক থেকে ঠিক। তাহলে কোনটা নীতির দিক থেকে ঠিক না, যেটাতে স্বার্থ জড়িত নেই! কেননা স্বার্থ জড়িত থাকলে আমি দেশ থেকে আলাদা হয়ে যাব। আমি সমাজে বাস করছি, সকল মানুষ কে নিয়ে আমাকে থাকতেই হবে। কিন্তু সেখানে যদি আমি স্বার্থ দেখতে থাকি, আর প্রত্যেকেই যদি তার স্বার্থ দেখতে যায়, তাহলে ক্রমাগত পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলবে, পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলবে। কে কাকে হারিয়ে দিতে পারে, কে কাকে বঞ্চিত করতে পারে, কে কাকে শোষণ করতে পারে-এই ভাবগুলোই প্রাধান্য পাবে সকলের মনের মধ্যে এবং যদি ক্রমাগত আমরা এই ব্যবহারকে প্রশ্রয় দিতে থাকি,তাহলে সেগুলো আমাদের স্বভাবে পরিণত হবে। এবং স্বভাবে পরিণত হলে আমরা ওই রকম আরও বেশি করে করতে থাকব,ফলে সমাজ-জীবন বিপন্ন হবে।
আজকে সমাজ-জীবন সেই জন্যেই বিপন্ন হয়েছে, যেহেতু আমরা উপযুক্ত শিক্ষা নেবার চেষ্টা করিনি। সেই উপযুক্ত শিক্ষা নেবার প্রয়োজনীয়তা যদি আমরা বুঝি তাহলে একটা মস্ত লাভ হবে। আমাদের বুঝতে হবে, আমরা যেন উপযুক্ত ভাবে শিক্ষিত হই। 
৬.
শিক্ষা ও চরিত্র 
উপযুক্তভাবে শিক্ষিত হওয়া তাহলে অনেক দিক থেকে দেখা যায়। আমরা ঠিক নীতির কাজ করতে পারছি কি না, আমরা কতগুলো ভাব ঠিক আয়ত্ত করতে পারছি কি না, সেগুলো আমাদের নিজস্ব করে ফেলতে পারছি কি না। আমরা আমাদের যে শক্তি আছে, নিজেদের শক্তি,দেহের শক্তি,মনের শক্তি, ভেতরের শক্তি -সেইগুলোকে  উপযুক্ত ভাবে কাজে লাগাবার বুদ্ধিটা বিদ্যাটা অর্জন করছি কি না,এগুলো বোঝা দরকার। 
আমাদের মধ্যে যে পূর্নতা আছে, যে সম্ভাবনা আছে সুপ্ত, তাকে প্রকাশ করতে পারছি কি না সেটা দেখতে হবে। এটাই হচ্ছে উপযুক্ত শিক্ষা। এবং এই শিক্ষা লাভ করলে যেটা হয়, আমাদের যে পরিবর্তন হয়, আমাদের যে নতুন আকৃতি হয় (আকৃতি মানে দেহের আকৃতি নয়), আমাদের মনের যে নতুন গঠন হয়, সেই গঠন আমাদের সমস্ত চিন্তা আর কাজকে চালিত করবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটার নামই হল কিন্তু চরিত্রে। উপযুক্ত শিক্ষাই আমাদের চরিত্র গঠনে সাহায্য করে।         
 ৭.
শিক্ষার প্রথম কথা মন
এর পেছনে সেই জন্য থাকবে সব থেকে প্রাধান্য যে জিনিসটির, সেটি হল ঠিক চিন্তা। যথার্থভাবে চিন্তা না করতে পারলে কিন্তু এর কোনটা হবে না। সেজন্য মনটার দিকে নজর দিতে হবে খুব ভাল করে। মনটাকে সংযত না করতে পারলে, আমরা আমাদের চিন্তাকে ইচ্ছে মত খাতে প্রবাহিত করতে পারব না এবং চিন্তা যদি আমাদের ইচ্ছানুরূপ খাতে প্রবাহিত না হয়,তাহলে আমাদের সমস্ত কাজ ঠিক দিকে যাবে না, নীতির দিকে যাবে না। নীতির দিকে যাবে না মানে স্বার্থের দিকে যাবে। পরার্থের দিকে যাবে না মানে সমাজ-জীবনকে বিপন্ন করবে। 
সেজন্য ঠিক চিন্তার ওপরে খুব গুরুত্ব দিতে হবে। এবং সেটার জন্যে নিজেদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করতে হবে। এই রকম করলে, এই নীতিবোধ নিয়ে জাগতে থাকলে, এই রকম শিক্ষা পেলে এই রকম চরিত্রে ধীরে ধীরে গঠিত হতে থাকলে, তখন আমরা কোনটা আমাদের কর্তব্য সেটা ঠিক বুঝতে পারবো। 
৮.
অধিকার ও কর্তব্য 
আমরা অধিকারের জন্য অনেক সময়ই চিৎকার করে থাকি। কিন্তু কর্তব্যের সম্বন্ধে কখনই চিৎকার করি না। কিন্তু কর্তব্য সম্বন্ধে যদি আমরা সচেতন না হই, অধিকার কখন পেতেই পারি না। এটা বোঝা উচিত। আমরা ঠিক ঠিক কর্তব্য করলে তবেই আমাদের ন্যায্য অধিকার ঠিক ঠিক লাভ করতে পারবো। তা না হলে কখনই পারব না, শুধু যদি আমরা আমাদের অধিকারের কথাই বলে যাই। অধিকার কি থেকে জন্মায় ? অধিকার আমাদের কর্তব্য থেকেই জন্মায়। আমরা কর্তব্য সম্পাদন না করলে আমাদের অধিকারই থাকবে না। কিসের ওপর অধিকার বর্তাবে ? 
আমরা কর্তব্য পালন করলে যে সমস্ত জিনিস উৎপন্ন হবে, তৈরি হবে, সেগুলো ব্যবহারিক। 
বাইরের যেমন দ্রব্য সামগ্রী ইত্যাদি আছে তেমন মনোজগতেরও আছে । মনোজগতেরও যে কর্তব্য আমাদের আছে, norms, যে নীতি, যে সৎ চিন্তা, যে সৎ উপায়, যে সকলের চিন্তা, সকলের কল্যাণের চিন্তা, সকলের ভাল হওয়ার পরিপেক্ষিতে যে চিন্তা, সেই চিন্তা করলে মূল্যবোধ (Values) -এর সৃষ্টি হয়, যার সামাজিক মূল্য, মানবিক মূল্য আছে।  
৯.
কর্তব্য ও মূল্যবোধ 
মানবিক বা সামাজিক মূল্যবোধ মানুষের মন থেকে আসে। মানুষের মন থেকে সামাজিক মূল্য সমাজ প্রতিষ্ঠা পেতে পারে আমাদের কর্তব্যের বোধ থেকে। আমাদের প্রথম কর্তব্য অপরের কল্যাণের জন্য চিন্তা করা। অপরের প্রয়োজন, অপরের সুখ, অপরের কোন বিঘ্নের নিবারণ। এগুলো হচ্ছে মস্ত কর্তব্য। এই কর্তব্যগুলো থেকে বিভিন্ন বিষয়ের মূল্যবোধ আমাদের মধ্যে জাগ্রত হয় এবং এগুলো শিক্ষার বিশেষ প্রয়োজন। 
এগুলো থেকেই আমাদের চরিত্র গড়ে ওঠে । এগুলো থেকেই আমরা সমাজ-সচেতন হই। আমরা সমাজ সচেতন না হলে কার কাছে অধিকার আদায় করব ? আমরা অধিকার আদায় করবো যে সমাজের কাছে থেকে, সে সমাজের যদি মূলধন না থাকে, সে অধিকারটা কোথা থেকে আদায় করব? 
কিন্তু সামাজিক মূলধন শুধু অর্থের দ্বারাই সৃষ্ট হয় না। ভাব-জগতের মূলধন সমাজ-জীবনের জন্য অপরিহার্য! মূল্যবোধের মূলধন যদি সমাজে না থাকে তাহলে অধিকারটা কোথা থেকে আদায় করব ? তবিল নেই টাকা কোথায় পাব ? সমাজে যদি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত না থাকে, যদি সুযোগ-সুবিধে না থাকে, যদি সমাজে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি, পরস্পরের মঙ্গলের জন্য করব্যবোধ না থাকে, তবে আমার অধিকারটা মেটাবে কে ? যে মেটাবে সে তো আমিই ! এই অর্থে অধিকার মেটাবে সমাজ, কিন্তু আমি তো সমাজের অংশ। 
সমাজ অধিকারগুলো দেবে কোথা থেকে ? সমাজ তা পাবে কোথায় ? আমি তো সমাজের অংশ। আমার যেটুকু কর্তব্য তা আমি যদি না করি তো সমাজ কোথা থেকে আমার অধিকারগুলো মেটাবে ? এটা সম্ভব নয়। একটা দুধের পুকুর হবে এরকম প্রস্তাব সকলেই যদি ভাবে, আর সবাই তো দুধ দিচ্ছে আমি একটু জল দিলে কি ক্ষতি হবে, তাহলে কিন্তু সেটা দুধ-পুকুর হয় না, জলের পুকুর হয়। দুধ পুকুর করবার প্রকল্প নিয়ে যদি সকলেই জল ঢালি তাহলে দুধটা সেখান থেকে পাব কি ? পাব না। প্রত্যেকের যেটা কর্তব্য, প্রত্যেকেই সেটা সম্পাদন করতে হবে। তবেই পরে আমাদের কিছু অধিকার জন্মাতে পারে, অর্থাৎ আমি যদি কিছু দিয়ে থাকি তবে প্রয়োজনে আমি কিছু পেতেও পারি। 
সেই অধিকার যে পাব তার জন্যে আমার যে কর্তব্য, পুকুরে একমাত্র দুধ দেওয়ার কথা ছিল, সেটা আমাকে করতে হবে। আমার কর্তব্য না করে কখনই আমি অধিকার আদায় করতে পারি না। কারন, তা হতে পারে না। এ জিনিসটা শেখা আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের চরিত্রে মধ্যে এই কর্তব্যবোধ না থাকলে আমাদের চরিত্রই হল না। আমাদের কর্তব্য সমন্ধেও যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। আমাদের সমাজ, জাতির প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে সেটা ভুললে চলবে না এবং চরিত্র-গঠন কিন্তু সেই জন্যেই করতে হবে। কারণ, আমাদের সমাজ বা জাতি কাদের নিয়ে ? আমাদের নিয়ে। আমাদের প্রত্যেক কে নিয়েই আমাদের জাতি, আমাদের সমাজ। আমাদের সমাজকে যদি ভাল করা আমাদের লক্ষ্য হয়, আমাদের জাতিকে গড়ে তোলা, বড় করে তোলা যদি আমাদের দায়িত্ব হয়, তাহলে প্রত্যেককে আমাদের নিজেদের ভাল হতে হবে, তৈরী হতে হবে, যথার্থ শিক্ষিত হতে হবে, মানুষের মতন মানুষ হতে হবে, চরিত্রবান হতে হবে। এই সোজা কথাটা বুঝতে হবে। এইটে আমাদের দেশের জন্য করা প্রয়োজন। 
১০.
সমাজের ভাবনা 
সকলকেই এই চিন্তায় ভাবিত হতে হবে। সকলে যদি এই চিন্তা না করে, আর তার যেটুকু কর্তব্য, সে যদি সেটা সম্পাদন না করে তা হলে এটা তো হতে পারে না। কি করে হতে পারে এত বড় জিনিসটা ? কারোর একার চেষ্টায় তো হবে না। (মহামণ্ডলের) লক্ষ্যটা হল, উদ্দেশ্যটা হল দেশের ভাল, জাতির ভাল, সমাজের ভাল-আমাদের জাতির মঙ্গল, কল্যাণ। আমরা অনেকেই ছুটে বেড়িয়ে যেতে চাই দেশের কল্যাণ করতে ! 
কিন্তু ভাবি না, কোথায় যাচ্ছি ? কার কল্যাণ করছি ? কি ভাবে কল্যাণ করছি ? হয়ত নিরন্নকে অন্ন দিচ্ছি, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দিচ্ছি, বন্যায় বা অন্য কিছুতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের বিভিন্ন রকম সাহায়্য দিচ্ছি, রোগীকে ঔষধ দিচ্ছি,অশিক্ষিতকে কিছু শিক্ষা দেবার চেষ্টা করছি, যে গৃহহীন হয়ে পড়েছে, তাকে বাড়ী তৈরী করে দেবার চেষ্টা করছি। খুব ভাল। কিন্তু এটা হচ্ছে প্রাথমিক। একটু নিচু স্তরের।  
এর থেকে আরও বড় সাহায্যের প্রয়োজন আছে। এর চেয়ে বড় সাহায্য হল মানুষকে ভাব দেওয়া। ভাবে যারা দরিদ্র তাদের ভাবসমৃদ্ধ করে তোলা,মানুষকে সৎ চিন্তায় সমৃদ্ধ করে তোলা। এটা খুব প্রয়োজন। যেমন, যে মানুষ পেটে খেতে পায় না, বুদ্ধি নেই, জ্ঞানের আলো যাদের মধ্যে নেই, তাদের সেগুলো দেওয়া খুব ভাল কাজ। কিন্তু তার চেয়েও বড় কাজ হচ্ছে তাদের সদবুদ্ধি দেওয়া। এবং তারও ওপরে আছে। আমরা ততদূর যাচ্ছি না, সেটা আরও একটু শক্ত। সেটা হচ্ছে আত্মিক দিক থেকে তাদের উন্নত করা। ধর্মবোধে তাদের উন্নত করা। 
১১.
ধর্মবোধ ও আধ্যাত্মিকতা 
(৩H) 
ধর্মবোধটা অবশ্য খানিকটা বুঝতে পারা যায়। ধর্মবোধ মানেই হচ্ছে কর্তব্যবোধ। ধর্মের প্রাথমিক মানে, যেটা বিশেষ প্রয়োজন -সেটা হচ্ছে কর্তব্যপরায়ণতাআমাদের ধর্ম কি ? মানুষের ধর্ম কি? আমাদের কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন হওয়া। এবং সেই ধর্মের উপরের স্তরের যেটা, সেটা হচ্ছে তাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি খুলে দেওয়া। তাদের অনুভূতিকে এমন একটা স্তরে নিয়ে যাওয়া যাতে সে সেখানে সমস্ত মানুষের ঐক্য উপলব্ধি করতে পারে। ইটা হচ্ছে আধ্যাত্মিক সম্পদে মানুষ কে সমৃদ্ধ করা। এই দান এই সমাজ-সেবা যদি হয় সেটাই হবে শ্ৰেষ্ঠ সমাজ-সেবা ! তাই পরের স্তরে মানুষ কে ধনাত্মক চিন্তা, গঠনমূলক চিন্তা, উদ্দীপনাময়ী চিন্তা, বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে,দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন।     
আর তার নীচে হচ্ছে প্রানধারনের জন্যে, বেঁচে থাকার জন্যে আশু প্রয়োজন মেটাবার চেষ্টা। এটাও খুব প্রয়োজন কোন সন্দেহ নেই। কারন একজন মানুষ না বাঁচলে সে যুক্তি, বুদ্ধি, ভাব নিয়ে কি করবে? সে কোথায় আত্মার উন্নতি করবে? আত্মা কে যে সে উন্নত করবে,আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গিতে যে উন্নত হবে, তা কি নিয়ে করবে সে ? সে আত্মিক বুদ্ধিটা খুলবে কোথায় ? তার তো একটা আধার চাই, একটা কিছু তো চাই যেখানে সে মানুষটা চেষ্টা করবে। সেটিই হচ্ছে মানুষের দেহ ! কাজেই দেহটাকে বাঁচাতে হবে। সে জন্যেই কথা আছে,  " शरीरमाद्यं खलु धर्मसाधनम् ।।"  ५.३३ ।। [The human body is the foremost means of practicing purushartha' कुमारसम्भवम् - मल्लिनाथः/ কালিদাস কৃত কুমারসম্ভব সর্গ ৫/৩৩यह शरीर पुरुषार्थ करने के लिए सब से महत्त्वपूर्ण आद्य साधन है; इस बात का ध्यान रखते हुए मनुष्य को कभी शरीर की उपेक्षा नहीं करनी चाहिए। ]
কারন এই দেহের মধ্যে দিয়েই আমরা সব কিছু করব। দেহটা আমাদের একটা যন্ত্র। আমরা দেহ-সর্বস্ব নই। যে শিক্ষার মধ্যে থেকে আমরা এই দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করি, সেটাই হচ্ছে যথার্থ শিক্ষা   
অর্থাৎ আমরা কি ? আমাদের কি আছে ? ভাল করে জানতে হবে এবং যেটা আছে তাকে ভাল করে বিশ্লেষণ করতে হবে। তার মূল্য, তার বিভিন্ন অংশের মূল্য, আমাদের ভাল করে বুঝতে হবে। কেন বুঝতে হবে ? না, যে বিভিন্ন অংশ দিয়ে আমরা তৈরী, সেগুলোর যথার্থ মূল্য ও প্রকৃতি 
জানলে তবে আমরা সেগুলোর সদুপযোগ, সৎ ব্যবহার করতে পারব। আমাদের যা আছে তার যদি সৎ ব্যবহার না করি তাহলে তা কাজে লাগল না, ব্যর্থ হল, বিফল হল। কাজেই আমরা কি -সেটা ভাল করে জানতে হবে
আমরা দেখছি, প্রথম দেহ। কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা যদি এই দেহটা জেনেই থেমে যাই, তাহলে কিন্তু আমাদের অন্য সম্পদগুলো অনাহৃৎ (?), অব্যহৃত থেকে গেল। আমাদের দেহের ভেতরে মন আছে, বুদ্ধি আছে, তার ভেতরে আমাদের আত্মা আছে, সেগুলোর সদুপযোগ হল না, সদ্ব্যবহার হল না। সেগুলো ব্যর্থ হল, নষ্ট হল। তা হলে আমাদের যেটা ছিল তার উপযোগিতাটা আমরা পেলাম না, নষ্ট হয়ে গেল।  
কিন্তু এই যে বুদ্ধি বা আমাদের ভাব বা চিন্তার যে জগৎটা তারও কিন্তু আধারটা হল আমাদের দেহ।আর আমাদের যে আত্মা, আমাদের যে আধ্যাত্মিক দৃষ্টির কথা বলা হচ্ছে, সেটার দরকারটা হচ্ছে শুধু,আমাদের ঐক্য বোঝবার জন্যে। আমরা কেন সমাজসেবা করব ? আমরা কেন অন্য লোকের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার চেষ্টা করব ? আমরা কেন চাইব আমাদের দেশের ভাল হোক, মঙ্গল হোক? এই জন্যেই চাইব যে আমরা আলাদা নই। 
এবং একমাত্র এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের প্রতিযোগিতার বুদ্ধি, পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক পথ দিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করবার যে নীতিবিগর্হিত মনোভাব,তা থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে। কাজেই যদি আমরা নীতির পথে গিয়ে ব্যক্তির এবং দেশের কল্যাণ করতে চাই, তা হলে আমাদের এই আধ্যাত্মিক দৃষ্টির একটু প্রয়োজন আছে। 
মানে এই নয় যে, শুধু তথাকথিত ধর্মগুলো খুব বাড়াতে হবে। অনেক মন্দির, অনেক গির্জা, অনেক মসজিদ থাকলেই এই আধ্যাত্মিক দৃষ্টি মানুষের খুলবে না। সেগুলোর প্রয়োজন অন্য আছে। কিন্তু এই আধ্যাত্মিক দৃষ্টির প্রয়োজন আছে। এই আধ্যাত্মিক দৃষ্টি আমাদের ঐক্যবোধটা জাগায়। এই ঐক্যবোধ, এই সহমর্মিতা এই দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া আসবে না। চাপিয়ে দেওয়া সহানুভূতি বা অপরের জন্য চিন্তা বেশি কার্যকর হয় না, দীর্ঘস্থায়ীও হয় না, শেষ পর্যন্ত স্বার্থের দিকে ঝুঁকে পড়েই। 
১২.
শিক্ষা ও আধ্যাত্মিকতা 
কিন্তু সেই দৃষ্টি যদি আমরা লাভ করি বা পাই তাহলে আমাদের মানুষের মধ্যে যে আন্তর ঐক্য আছে, যে একটা সূত্রে আমরা গ্রথিত পরস্পরের সঙ্গে, সেই সূত্রটাকে আমরা আবিষ্কার করতে পারব। সেইজন্যে ওই দৃষ্টিতে উন্নত হওয়া আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন। এই দৃষ্টিলাভও প্রকৃত শিক্ষার অন্তর্গত! 
এ শিক্ষা যদি আমরা না পাই তা হলে আমাদের শিক্ষা অসম্পূর্ন থেকে গেল। সেজন্যেই যথার্থ ধর্ম বা আধ্যাত্মিকতা আর শিক্ষা খুব ভিন্ন জিনিস নয়। শিক্ষা ব্যাপক অর্থে যেখানে আছে সেখানে অধ্যাত্মিকতাও অন্তর্ভুক্ত। তার নীচে হচ্ছে আমাদের সৎভাব, সৎচিন্তা, সদবুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা। সদবুদ্ধি আর এই আধ্যাত্মিক ঐক্যবোধ কার্যকর হবে কিন্তু মানুষের দেহযন্ত্র দিয়ে। সেই জন্যে সেই দেহ-যন্ত্রটাকে সুন্দর, সবল, কার্যকর রাখার প্রয়োজন আছে। তাকে গড়ে তোলার প্রয়োজন আছে। 
তাই যখন আমরা চরিত্রগঠনের চেষ্টা করব, তখন সেই চরিত্রগঠনের অঙ্গীভূত হবে আমাদের দেহটাকে সুস্থ সবল রাখা। সুস্থ সবল দেহের মধ্যে একটি সুস্থ সবল মনের অধিকারী আমাদের হতে হবে। সে মন এবং দেহ চালিত হবে আমাদের আধ্যাত্মিক ঐক্যবোধের দ্বারা। এইটে যখন আমরা সমানভাবে করতে পারব তখন আমরা আমাদের শিক্ষিত বলতে পারব, তখন বলতে পারব আমাদের চরিত্র গঠিত হয়েছে, সুগঠিত, সুসংহত চরিত্র আমরা পেয়েছি। তখন আমরা বুঝব আমাদের অধিকার কোথায়, তখন আমরা সকলে সচেতন হব আমাদের কর্তব্য সম্বন্ধে, তখন আমরা আমাদের সমাজ ও জাতির যথার্থ কল্যাণ বুঝতে পারব, এবং সুষম ও সুন্দরভাবে আমাদের দেহ,মন, আধ্যাত্মিক বা আত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি -আমাদের সম্পদ বলতে যা কিছু আছে, সেগুলির সদুপযোগ করতে পারব সার্বিক কল্যাণের জন্য। 
আমাদের নিজস্ব সম্পদ বলতে এইটুকুই আছে -আমাদের দেহ আছে, মন আছে, আমাদের একটা আত্মা আছে ! কিন্তু সেই দেহ, মন আর আত্মার সুষমভাবে আমরা যদি শ্রীবৃদ্ধি না করতে পারি, তাদের মধ্যে যে নিহিত শক্তি আছে, সেগুলোকে যদি উপযুক্তভাবে ফুটিয়ে তুলতে না পারি, সেগুলির সুপ্ত শক্তিকে যদি জাগিয়ে তুলতে না পারি, আমাদের কথায়, চিন্তায় আর কাজে তাদের যদি প্রকাশ উপযুক্তভাবে আমরা সাধিত না করতে পারি, তাহলে আমরা যথার্থ শিক্ষিত হতে পারলাম না। 
আর এ রকম যদি করতে পারি তা হলে আমাদের দেহ, মন আর আত্মার ব্যবহারের দ্বারা আমরা আমাদের সমাজের, জাতির তথা সমগ্র মানব-জাতির কল্যানে আমাদের একমাত্র সম্পদ -আমাদের এই দেহ, মন আত্মা -সমর্পন করতে পারব। আমাদের এই দেহ, মন ও আত্মার সুষম বিকশিত সমাহারকে এ জগতে মানবজাতির সেবায় সম্পূর্ণ উৎসর্গ করতে পারা , সমর্পন করতে পারাটাই হচ্ছে মনুষ্য জীবনের একমাত্র সার্থকতা। মনুষ্য-জীবনের এই সামগ্রিক সার্থকতার পথে আমাদের যা চালিত করে নিয়ে যায়, তাই হচ্ছে আমাদের যথার্থ শিক্ষা। এই শিক্ষাই আমাদের চরিত্র গড়ে তোলে। 
১৩.
চরিত্র কি 
এগুলো মোটামুটি বুঝলাম। কিন্তু কোথায় কাজ শুরু করব ? এবং কিভাবে কাজ করব ? জগতের কল্যাণ, দেশের কল্যাণ, জাতির কল্যাণ, আমাদের চরিত্র গঠন, আমাদের কর্তব্যবোধ, আমাদের অধিকার কোথায় আছে, কেমনভাবে পাওয়া যায়, কর্তব্য না করলে অধিকার পাওয়া যায় না, চরিত্র গঠন করার প্রয়োজন, শিক্ষার প্রয়োজন, শিক্ষা কাকে বলে আমরা না হয় বুঝলাম। কিন্তু কি করে করব ?   
কি করে করব বুঝতে গেলে আমাদের আর একটু ভেতরে যাওয়া প্রয়োজন, চরিত্র কাকে বলে জানা প্রয়োজন। খুব সংক্ষেপে, চরিত্র প্রকাশিত হয় আমাদের চিন্তায়, কথায়,কাজে।যে কোন ব্যক্তির চিন্তা, কথা এবং কাজ দেখে আমরা তার চরিত্র সম্বন্ধে কিছু ধারণা করতে পারি। আমাদের চরিত্র হচ্ছে আমাদের ব্যবহারের সমগ্রতা। এবং ব্যবহার করবার যে বিশেষ ভঙ্গিটি এক একজনের আছে সেটিই হচ্ছে তার ব্যক্তিত্ব বা চরিত্র। 
আমাদের এই চরিত্রের প্রতিফলন হয় আমাদের চিন্তায়, কথায় এবং কাজে। এই চরিত্র গড়ে ওঠে আমাদের অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে। কাজেই আমাদের অভ্যাসগুলোকে আমরা যদি ভাল করতে চেষ্টা করি তাহলেই আমাদের ব্যক্তিত্ব এবং চরিত্র ভালভাবে তৈরী হবে। এবং ভাল ব্যক্তিত্ব, ভাল চরিত্রই আমাদের জাতির প্রতি, সমাজের প্রতি কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন করবে। আর আমরা পূরো সার্থকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারব। তাহলে হাতে-নাতে কাজ আরম্ভ করতে পারি আমরা আমাদের ভাল অভ্যাস করার মধ্যে দিয়ে।
ভাল অভ্যাস কি করে হয় ? প্রশ্ন হতে পারে, ভাল অভ্যাস হলেই ভাল হবে কেন ? চরিত্র কাকে বলছি আমরা ? বুঝতে পারছি কাকে চরিত্র বলে। চরিত্র অনুসারেই তো আমরা ব্যবহার করি। আমাদের ব্যবহার দেখে আমাদের চরিত্র বোঝা যায়। একজন একটা কোন অবস্থায় যে ভাবে প্রতিক্রিয়া করে তার চিন্তায়, তার কথায়, তার কাজে, তাই দিয়ে লোকটির চরিত্র কেমন তা বুঝতে পারা যায়। 
একটা উদাহরণ। এক জায়গায় একটা মূল্যবান জিনিস রইল, কেউ কোথাও নেই। সেখানে একটি লোক এলে সেই জিনিসটা নিয়ে সে যা করবে সেটা দেখে তার চরিত্র বোঝা যাবে। কেউ চেষ্টা করবে লুকিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে সেটাকে নিজের করে নিতে; কেউ চেষ্টা করবে জিনিসটা যার হারিয়েছে তাকে খুঁজে বার করতে -এই দুরকম পরস্পর বিরোধী একটা একটা কাজ। এক এক জনের ব্যবহার, আচার, আচরণ তার চরিত্রের পরিচয় দেবে। 
আচ্ছা, একজন দুটোর এক এক রকমটা করবে কেন ? একজন সেটা আত্মসাৎ করবার চেষ্টাও করতে পারে আর যে হারিয়েছে তাকে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টাও করতে পারে, তার জন্যে নিজের কাজ ফেলে হয়ত সময় নষ্ট করবে। এ রকমটা করবে কেন ? করবে এই জন্যে যে, যেমন স্বভাব বা যেমন অভ্যাস আগে করে রেখেছে সেই অনুসারে তারা উভয়েই কাজ করবে। সেটিই নির্ধারণ করবে কোন ব্যক্তিটি এখন কি রকম করবে না করবে। একজন যেটা নীতি সমর্থিত মনে হবে সেটিই করবে। 
কিন্তু কেন নীতিসমর্থিত জিনিস করবে ? নীতি সমর্থিত জিনিস করবে তখনই যখন সে অভ্যাস করেছে নীতিকে মেনে চলা। নীতিসমর্থিত কাজ করবার অভ্যাস যদি তার না থাকে তা হলে সে সেই মুহূর্তে দুটো জিনিসের দ্বারা তাড়িত হতে পারে, মানসিক দিক থেকে। একটা হতে পারে, তার লোভ তাকে বলতে পারে, "তুমি এটা আত্মসাৎ কর। আত্মসাৎ করার সুযোগ পেয়েছ, এই সুযোগে এটি আত্মসাৎ কর।" লোভ বৃত্তিটি (লস্ট এন্ড লুকর প্রতি) যদি প্রবল থাকে তার মধ্যে তা হলে সে সেরকম করবে।
আর তার যদি অভ্যাস হয়ে থাকে, একজন হারিয়েছে, এটা তার পাওয়া উচিত; পরের কল্যাণ, পরের ভাল করবার যদি তার অভ্যাস থেকে থাকে, আমি সত্য থেকে, নীতি থেকে কখনও বিচলিত হব না -এটা যদি সে অভ্যাস করে রেখে থাকে, তাহলে তখনকার তার বিচার তাকে বলবে যে,
"লোভ একটু উকি দিচ্ছে বটে , ওটায় অভ্যাস নেই, প্রবৃত্তি নেই। আমার প্রবৃত্তি বা অভ্যাস হচ্ছে, নীতি সমর্থিত যা তাই করা। কারন,আমি সঙ্কল্প করে অভ্যাস করেছি যে, নীতিবিগর্হিত কাজ কখনও করব না।"  কাজেই দুরকম অভ্যাসের সম্ভাবনা তার নেই। তার বিচার তাকে নীতির দিকে নিয়ে যাবে এবং সে তার জিনিসটা তাকে ফেরৎ দেবার চেষ্টা করবে। 
তা হলে দেখছি, আমাদের যে চরিত্রের প্রতিফলন আমাদের আচরণের মধ্যে, সেটা নির্ধারিত হচ্ছে আমাদের অভ্যাসের দ্বারা। 
১৪.
 সচেষ্ট অভ্যাস 
অভ্যাস কি করে হয় ? বার বার একই কর্ম সম্পাদনের মধ্যে দিয়ে আমাদের অভ্যাস গড়ে ওঠে । বার বার একই জিনিস করবার আমাদের একটা স্বাভাবিক বৃত্তি আছে। মানুষ যেটা একবার করে আবার সেটা করবার ইচ্ছে হয়। কেন ওরকম ইচ্ছে করে ? একটু বিচার করে দেখা যাক। মানুষ কাজ করে কি থেকে ? 
মানুষ কাজ করে চিন্তা থেকে। একটা কাজ করবার চিন্তা মানুষের মনে এলে, তখন সে তার দেহ বা অন্যান্য যন্ত্র বা অন্যান্য সামগ্রীর সাহায্যে তার ইচ্ছাটাকে রূপ দেবার চেষ্টা করে। তাকেই কাজ করা বলে। কিন্তু সেই কাজের জনক কে ? কাজের কারনটা কোথায় ? কাজের কারনটা মনে, চিন্তায়। তা হলে যদি আমাদের ভাল চরিত্রের জন্য ভাল কাজ বার বার করতে হয়, তা হলে ভাল চিন্তা মনে আসে সেই চেষ্টা করতে হবে। তা হলে আবার দেখছি, মনের দখল নেবার দিকে আমাদের চেষ্টা রাখতে হবে। এটা অত্যন্ত প্রয়োজন। এখন এই অভ্যাস কি করা যায় ? এটা হয় কিভাবে ?
১৫.
মনের কাজ 
এটা হয় মনের ভেতর, বলছি আমরা। কিন্তু মন জিনিসটা কি ? সেটা সব সময়ই ধোঁয়া ধোঁয়া থেকে যাচ্ছে আমাদের কাছে। একটা মনের স্পষ্ট ছবি আমরা পাচ্ছি না। মনটা এই রকম। মনটা হচ্ছে ক্যামেরা যন্ত্রের মতন। আমরা ক্যামেরায় ছবি তুলি। কি করে তুলছি? 
একটা ছাপ গ্রহনক্ষম ফিল্ম আমার ক্যামেরার মধ্যে ভরা আছে। সেটা এমন ভাবে তৈরী করা, সেটার ওপরে আলো পড়লে একটা রাসায়নিক প্রক্রিয়া হয়। যেখানটা আলো পড়ল না সেখানটা হল না। কাজেই যে বস্তুর সামনে ক্যামেরাটি রেখে আমি শাটারটা টিপলাম, আচ্ছাদনটা সরে গিয়ে একটু আলো সেখান দিয়ে ঢুকলো। যে বস্তুটি রয়েছে তার চারিদিকের রেখা বা যা কিছু রয়েছে সে সমস্ত জায়গা থেকে ঐখান দিয়ে এসে, যেখান থেকে সেটা আসছে ঠিক সেই জায়গাগুলো থেকে আলোগুলো পড়লো। কাজেই যখন আমি সেটা শোধন করলাম, যে বস্তুটার সামনে রেখে ক্যামেরায় আলো ফেলেছিলাম, যে ছবির বিভিন্ন অংশ থেকে বিভিন্ন রকমের আলো কম বেশি পড়েছিল, তার ছবিটা ফিল্মের ওপর ওঠে গেল। 
মানুষের মনটা ঠিক এরকম একটি ক্যামেরা যন্ত্রের মতন। আমরা বাইরের বস্তুজগতের সামনে যখন মনটা নিয়ে দাঁড়াচ্ছি তখন আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো হচ্ছে আমাদের এই দেহ-ক্যামেরা -যন্ত্রের একটি লেন্স। যখন আমরা চোখের পাতটা ফেলি, চোখের পাতটি তুলি, ঠিক ঐ ক্যামেরার শাটারেরই মতন করছি আর একবার একবার চোখ খুলছি আর একটা একটা দৃশ্য আসছে। কিন্তু মন যন্ত্রটি ক্যামেরার থেকে আরও জটিল। এ শুধু চোখ দিয়ে আলো নেয় না, কান দিয়ে ধ্বনি নেয়, নাক দিয়ে ঘ্রান নেয়, ত্বক দিয়ে স্পর্শ নেয়, জিহবা দিয়ে রস নেয়। পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে পাঁচ রকমের ইন্দ্রিয়-উপাত্ত, বাইরের থেকে একই ক্যামেরা যন্ত্রের একটি ত্বকের ওপর নেয়। 
যেমন সবাক চলচিত্রের ফিল্ম দুটোকে কোন রকম জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে - একটা আলোকে, আর একটা ধ্বনিকে। আমরা ধ্বনি এবং ছবি, এক সঙ্গে তুলছি। 
কিন্তু আমাদের এই মন-যন্ত্রটি আমরা মানুষের বুদ্ধি দিয়ে তৈরী করিনি। এটি আরও সুন্দর ক্যামেরা। সেটা দিয়ে পাঁচ রকমের ইন্দ্রিয় দিয়ে ধরা যায় পাঁচ রকমের উপাত্ত। আমরা পাঁচ রকমের সংবাদ বাইরে থেকে সংগ্ৰহ করে ঐ মনের একটি প্লেটে সবটা একসঙ্গে ফেলতে পারি এবং সেই মনের প্লেট বা ফিল্মটিকে বিশোধিত করে এই পাঁচ রকম ইন্দ্রিয় উপাত্তের মোট দীর্ঘস্থায়ী ছাপ আমাদের মনের মধ্যে রেখে দিতে পারি। 
একটি ফুলের গন্ধ আমি এখন শুঁকলাম। একটি গোলাপ ফুল। চমৎকার সেই গন্ধের ছাপ আমার মনে এমনভাবে রাখতে পারি যে, পরে যখন একটি গোলাপ দূর থেকে দেখব অথবা গোলাপ ফুলের কথা চিন্তামাত্র করব, তখন পারস্পরিক সম্পর্কের ধর্ম (Law of Association) আমার মনের মধ্যে সেই গোলাপের গন্ধটাও পুনর্জাগরিত হবে! আমি একটা গোলাপের দিকে চেয়ে দেখামাত্র বা গোলাপের কথা ভাবামাত্র মনে মনে গোলাপের বিশেষ সৌরভটা আবার ভোগ করতে পারব। সমস্ত বিষয়ে এই রকম। 
কাজেই এ রকম করতে করতে আমাদের মনের মধ্যে কতকগুলি ছাপ প্রায় চিরস্থায়ী হয়ে যায়, আমরা যখন কাজ করি। এই মনযন্ত্রটা নিয়ে আমরা ঘুরছি। তাতে বাইরের যা কিছু আছে সবের ভাব ক্রমাগত যাচ্ছে। যেমন টেলিপ্রিন্টারে খবরের কাগজের অফিসে বা অন্যত্র ক্রমাগত প্রতি মুহূর্ত সারা বিশ্বের কত সংবাদ এসে ছাপা হয়ে যাচ্ছে পর পর। তার মধ্যে থেকে বেছে কেউ একটা করে শিরোনাম দিয়ে কোন সংবাদ দেবে, কতটা দেবে ঠিক করছে।
তেমন এই মন-ক্যামেরার সামনে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে দিয়ে বিশ্বজগতের শত সহস্র সংবাদ (সংবাদ আমার মনে এক রকমের নয়, পাঁচ রকমের) মনের মধ্যে চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে আমরা যে কাজগুলো করছি সেগুলোও কতকগুলি জিনিস। আমরা যে চিন্তা করছি সেগুলোও কতকগুলো জিনিস, আমরা যে কথা বলছি সেগুলোও কতকগুলো জিনিস। আমরা যে চিন্তা করছি, কথা বলছি, কাজ করছি, সেগুলোও কিন্তু তখন এই ক্যামেরায় নেওয়া ছবি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সেই চিন্তাগুলো, সেই কাজগুলো সেই কথাগুলো সমান পদ্ধতির প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের মনে ছবি ফেলছে, ছাপ রাখছে। 
আমি যে কাজ নিজে করছি সেই কাজের ছবি অন্যে যে কাজ করছে তার থেকে তার থেকে আর একটু বেশি দাগ কাটতে পারে। কারণ সেখানে আমার অহংকার-বুদ্ধি রয়েছে, থাকতে বাধ্য। যে কাজটার কর্তা অন্যে, তা থেকে যে কাজটার কর্তা আমি নিজে সেটার প্রাধান্য আমি দেবই, আপনিই দেব, না ভাবলেও দেব, কারন এটা আমার ! স্বাভাবিকভাবে সকলেই 'আমি-আমার' টা বেশি ভালবাসি। আমি করেছি এই ভাবটা আমাদের মধ্যে আছে। আমাদের অহংকার আছে। আমরা যে করছি, এ বোধটা না ভাবলেও আছে। কাজেই আমার কাজের, আমার চিন্তার, আমার কথার ছাপ আমার মনে যেটা পড়বে, সেটা অন্যের চিন্তা, অন্যের কথা, অন্যের কাজের থেকে বেশি দাগ কাটবে, বেশি স্পষ্ট ছাপ রাখবে। 
আমি যে চিন্তা একবার করলাম সেটা যদি বার বার করি, তা হলে আমার মনের মধ্যে সেই রকম চিন্তার একটা গভীর খাত হয়ে যাবে। যেমন ভাবে গ্রামে ধান কাটা হয়ে যাবার পরে, যেখানে খুব ভাল রাস্তা-ঘাট নেই, সেখানে যখন মাঠের মধ্যে দিয়ে গরুর গাড়ি যায়, গরুর গাড়ি যেতে যেতে, যাকে লিক বলে, দুটো চাকার দাগ পড়ে যায়, পরের গরুর গাড়ি যখন আসে তখন গরুর গাড়ির চালককে আর সেখান দিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে ছিপটি মারতে হয় না, দড়িটি টানতে হয় না। গরু আপনা থেকেই সেই লিক ধরে এঁকে বেঁকে যায়। 
আমাদের মনের চিন্তা, কথা এবং কাজ আমাদের আগেকার সেই চিন্তা, কথা এবং কাজের যে দাগগুলো পড়ে আছে মনে, সেগুলোকে অনুসরণ করে যেতে চায়, ঐ নির্বোধ গরুর মতন, স্বাভাবিক ভাবে, স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে। এভাবেই আমাদের অভ্যাস গড়ে ওঠে। 
১৬.
চরিত্রের সংজ্ঞা ও ভবিতব্য 
সেজন্যে আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করে দেখতে পাই, যে কাজ আমরা করি, সে কাজ আবার করবার প্রবৃত্তি কেন আসে ? এবং সেটা যদি বার বার করে যাই তা হলে এই যে দাগ মনের মধ্যে আমার চিন্তার, আমার কথার আমার কাজের সেটা কেন গভীর হয়ে যাবে? সেটিকেই আমরা বলি অভ্যাস। সেটা গভীরতর হলে তা হয় আমাদের 'প্রবণতা' এবং সেই রকম নানান রকমের প্রবণতার সমাহারই হল আমাদের চরিত্র। 
তা হলে আমরা এই বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে দেখতে পাই যে, আমাদের চরিত্র আমরা ইচ্ছানুরূপ করতে পারি। আমাদের চরিত্র আমাদের জন্মগত নয়। আমাদের চরিত্র বিধাতা আমাদের কপালে লিখে দেন না, আমরাই আমাদের ভবিতব্যের স্রষ্টা। কারন, আমাদের চরিত্রই আমাদের ভবিতব্যকে গড়ে তুলবে। 
চিন্তা আমাদের কাজে প্রবৃত্ত করবে, আমাদের কর্ম আমাদের অভ্যাসে পরিণত হবে। অভ্যাস পরিপক্ব হয়ে আমাদের প্রবণতা আসবে। প্রবণতার সমাহার হবে আমাদের চরিত্র। চরিত্রের অনুবর্তী হয়ে ক্রমাগত আমরা সারাজীবন কাজ করতে করতে আমাদের ভাগ্য, ভবিষ্যৎ নিজেরাই গড়ে তুলব। 
কাজেই ইটা যখন জানলাম তখন আমার দায়িত্ব খুব বেড়ে গেল। কারন আমার ভবিষ্যতের জন্যে আমি ছাড়া আর কেউ দায়ী নয়। কাজেই অল্প বয়স থেকে আমার চিন্তা, আমার ব্যবহার, আমার বাক্য, আমার কর্ম কে সংযত, শাসিত, চালিত করব। সাবধান হব, চিন্তা করে সেগুলোকে ভাল দিকে নিয়ে গিয়ে একটা ভাল চরিত্র গড়ে তুলব। কারন যদি তা না করি আমার ভবিষ্যৎ খারাপ হবে। 
যেমন আমার চরিত্র, আমার ভবিষ্যৎ, সেই রকম প্রত্যেক 'আমি' সমাজে রয়েছে, যাদের নিয়ে সমস্ত সমাজ। তা হলে সমাজের ভবিষ্যৎ এই ব্যাক্তিগুলোর ভবিষ্যতের ওপর নির্ভর করছে। সমাজের ভাল যদি করতে হয় তা হলে প্রত্যেকটি ব্যক্তির ভবিষ্যৎ ভাল করবার জন্য প্রয়োজনীয় চরিত্র প্রত্যেকের গড়ে তুলতে হবে। সেই জন্যে সামাজিক বিপ্লব যদি সত্যি আনতে হয়, সমস্ত সমাজের আমূল পরিবর্তন, যেটা স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন - সেই পরিবর্তনের নামই বিপ্লব - সেই আমূল পরিবর্তন যদি সমাজে আনতে হয় তা হলে প্রত্যেকটি ব্যক্তির চরিত্র সম্বন্ধে সচেতন, সাবধান হতে হবে এবং প্রযত্ন নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চালিয়ে যেতে হবে, অক্লান্তভাবে ক্রমাগত চালিয়ে যেতে হবে। সংকল্পে স্থির থাকতে হবে। যুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে যে , এ ছাড়া উপায় নেই।এখন অন্তত এটুকু আমরা বুঝতে পেরেছি যে, চরিত্র কাকে বলে, চরিত্র কিভাবে তৈরী করা যেতে পারে, চরিত্রের দোষত্রূটি কি ভাবে কমানো যেতে পারে এবং আমাদের চরিত্র তৈরী করার ওপরে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের ভবিষ্যৎ কতখানি নির্ভর করছে এবং কেমন ভাবে আমাদের প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ এবং চরিত্রের ওপর আমাদের সমাজের চরিত্র এবং ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। যদি সমাজ ও জাতির প্রতি আমাদের বিন্দুমাত্র কর্তব্যবোধ থেকে থাকে, তা হলে আমরা চরিত্র গঠনের জন্য প্রযত্ন করব এবং তার উপায় আরও ভাল করে জেনে নেবার চেষ্টা করব। এই শিক্ষাই যথার্থ শিক্ষা যা সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম । 
------------------------------------------
প্রথম প্রকাশ -ডিসেম্বর, ১৯৮৭ 
====================                               
     
       




    

  










गुरुवार, 22 सितंबर 2016

$$$ लीडरशिप क्लास /इक्कीसवीं शताब्दी के भण्डार में क्या है ? विश्व रंगमंच पर भारत का उत्थान

'बी ऐंड मेक रूपी अद्वैतवाद ने भौतिकवाद से भारत की रक्षा दो बार  की है'
 (पूर्वकाल में बुद्ध और आचर्य शंकर के मध्यम से)  
जगत की वर्तमान अवस्था के ऊपर जब हमलोग दृष्टिपात करते हैं, तो क्या देखते हैं ? भविष्य का कैसा परिदृश्य हमारी दृष्टि के समक्ष उभरता है- वह दृश्य निराशाजनक है, अथवा उज्ज्वल संभावनाओं से भरपूर है? क्या वह परिदृश्य पूर्णतया -हमारे अपने आप्टमिस्ट दृष्टिकोण (केवल अच्छे पक्ष को देखने का नजरिया), या पेसिमिस्ट (संसार को केवल दुःखपूर्ण समझने का) नजरिया पर निर्भर नहीं करता ? वर्तमान जगत, जीवन को किस प्रकार से देखने का नजरिया प्रदान कर रहा है या भविष्य, हमें जीवन के प्रति कैसा दृष्टिकोण प्रदान कर सकता है ? 
 मानव ने इतनी अधिक वस्तुऐं स्वयं निर्मित कर ली है, कि उन वस्तुओं ने ही उसके अस्तित्व के लिये संघर्ष को कठिनतर बना दिया है। मानव के लिये जितने आविष्कार सचमुच हितकारी हो सकते थे, उसने कहीं उससे अधिक आविष्कृत कर लिया है। जितनी भौतिक वस्तुयें उसके आधिपत्य में होने से वह उसका सही आनन्द ले सकता था, उसने उससे कहीं ज्यादा संग्रहित कर लिया है। तथा भौतिक वस्तुओं को प्राप्त करने और अधिकार में रखने की लालसा जितनी अधिक बढ़ती जा रही है, उतनी ही मात्रा में उसके मन से सुख-शांति भी विस्थापित होकर निर्वासित होती जा रही है। 
मानव ने स्वयं जिस जगत की रचना की है, उस जगत ने उसे यही विश्वास करना सिखलाया है कि - " अब भगवान का निधन हो चुका है"! इसीलिये वह कभी कभी अगोचर भगवान का भक्त होने का पाखण्ड भी कर लेता है, किन्तु उनके स्थान पर अपने हृदय में उसने "Lust and Lucre" (कामुकता और कमाई) की युगल मूर्ति को स्थापित कर रखा है। 
इसी तृष्णा में उसने प्रकृति को लूटकर भीतर तक उजाड़ कर दिया है, और प्रकृति ने भी प्रतिशोध लेते हुए मनुष्य के अभ्यंतर (हृदय) को आत्मश्रद्धा से रहित और शक्तिहीन बना दिया है। "बिरीव्ड ऑफ़ इनर पॉवर" आंतरिक शक्ति (आत्म-शक्ति) से वंचित होकर, वह स्वयं को ही (यह विश्वास करने के लिये) -हिप्नोटाइज या सम्मोहित करने लगता है कि वह " सर्वशक्तिमान आत्मा" नहीं, बल्कि " इतिहास और परिवेश" (History and Environment) की जंजीरों से बंधा एक पशु है! 
और इस प्रकार 'इंस्टेड ऑफ़ रीमेकिंग अ वर्ल्ड टू लीव इन'--इस जगत को पुनः नये सीरे से "मनुष्य" के रहने योग्य बनाने में समर्थ नेता (ब्रह्मवेत्ता-सिंह) बनने और बनाने का प्रयत्न-जब वह कर ही नहीं पाता, तब यह जगत स्वयं उस मनुष्य को ही पटक-पटक कर विकृत और बौना (भेंड़) बना देता है। और 'पदार्थ और ऊर्जा' (Matter and Energy) को अपना एक अनुकूल सेवक (good servant) बनाने के प्रयास में, (उनकी समतुल्यता, E=M अविवादित है); मनुष्य अपने को ही पदार्थ (Matter) का (लस्ट ऐंड लूकर या कामुकता और कमाई का) एक निस्सहाय दास बना लेता है।
[जो मनुष्य भोगवादी संस्कृति से प्रभावित होकर 'पदार्थ और ऊर्जा' (Matter and Energy) को, स्वामी जी की भाषा में (Matter and Force) 'पदार्थ और शक्ति' को [ श्री ठाकुर की भाषा में 'कामिनी-कांचन', श्री दादा की भाषा में 'लस्ट एंड लूकर'']  को  अपना गुड-सर्वेंट अनुकूल सेवक बना लेने के प्रयास में लगा रहता है, और  इस जगत को मनुष्यों के रहने योग्य बनाने का प्रयास, अर्थात भारत का कल्याण के माध्यम से सम्पूर्ण विश्व के कल्याण के लिए कोई प्रयास नहीं करता। क्योंकि 'पदार्थ और शक्ति'  (Mass and Energy) की समतुल्यता, (E=Mc2) अविवादित सत्य है,  इसीलिए यह जगत (अव्यक्त शक्ति) ही वैसे मनुष्यों को पटक-पटक कर, उसकी महिमा से नीचे गिरा देता है और  'विकृत और बौना मनुष्य' अर्थात भेंड़-मानव (पशु-मानव) में परिणत कर देता है! 
अर्थात जब तक मनुष्य सम्पूर्ण जगत को 'बी ऐंड मेक ' का महावाक्य सुनाकर, जगत को ब्रह्म-मय (सिंह-मय) जगत बनाने की चेष्टा नहीं करता,वह " कामुकता और कमाई " के कण्डूरोग द्वारा हिप्नोटाइज्ड होकर,मनुष्य यह भूल जाता है कि, "मैं अविनाशी आत्मा, सिंह हूँ -अहं ब्रह्मSस्मि "! और में-में, करता हुआ 'मैं तो भेंड़ (नश्वर शरीर मात्र) हूँ' यह विश्वास करने के लिये स्वयं को ही सम्मोहित करने लगता है। (जब तक नेता सिंह -गुरु विवेकानन्द नहीं मिल जाते) अर्थात जब तक वह महामण्डल द्वारा निर्देशित ५ दैनंदिन अभ्यासों का पालन नहीं करता, और 'कामुकता और कमाई' की माया (चकाचौंध) से सम्मोहित होकर स्वयं से रात-दिन कहता रहता है कि मैं " इतिहास और परिवेश" (History= पूर्व जन्म की आदतें या प्रवृत्तियाँ, एवम  Environment-जिस M/F शरीर में जन्म हुआ, उसी को 'मैं'- मानने के भ्रम) की जंजीरों से बन्धा भेंड़ हूँ !
इक्कीसवीं सदी में प्रविष्ट होने की प्रस्तुति  
यह जगत इक्कीसवीं सदी में प्रविष्ट होने के लिये स्वयं को तैयार कर रहा है, तथा संक्रमण काल की  समस्त मुसीबतों का डट कर मुकाबला करने को कृतसंकल्प है। विस्मयकारी इलेक्ट्रॉनिक गैजट्स (यंत्र-उपकरण) एवं भविष्य में अत्याधुनिक-यान में अंतरिक्ष-यात्रा के दौरान जीवन का लुत्फ़ मनुष्य के मन को इतना अधिक प्रलुब्ध कर रहा है कि वह मानसिक सन्तुलन खो देने के कागार तक जा पहुँचा है। कुछ अमेरिकी मनोवैज्ञानिक अंतरिक्ष-यात्रा के दौरान अबाधित सेक्स के मानवाधिकार (?) को संरक्षित रखने के लिये अभी से संघर्षरत हो गए हैं। सचमुच यह संस्कृति और आधुनिक मानव के सम्पूर्णता की निशानी ही तो है ! इसी समय के एक प्रख्यात वैज्ञानिक इस तर्क के आधार पर, उन कीटनाशकों पर लगे प्रतिबन्ध का विरोध कर रहे हैंकि उन कीटनाशकों - जो कीटनाशक दवाइयाँ कीटों और मनुष्यों को एक साथ मार रही हैं; को प्रतिबन्धित कर देने से, कृषि उत्पादन में भारी ह्रास होने की सम्भवना है। उसका मानना है कि यदि कीटनाशकों को प्रतिबन्धित कर देंगे तो, आने वाले दशकों में विश्व के बहुत बड़े क्षेत्र पर जो भुखमरी (famine) का खतरा मंडरायेगा उसका मुकाबला कैसे करेंगे ? 
कोयला और पेट्रोलियम के घटती हुई आरक्षित भंडारों का दोहन करने के प्रयास ने परमाणु संयत्रों को विकसित करने के प्रयास को एक मजबूत आधार दे दिया है। यहाँ तक कि भारत में भी हमलोग कुछ ही वर्षों में परमाणु ऊर्जा संयत्रों की एक श्रृंखला खड़ी करने जा रहे हैं। क्या हमारे वैज्ञानिकों को इतना पता नहीं है कि यदि किसी परमाणु संयत्र में गंभीर दुर्घटना घट गयी तो तो उससे इतनी अधिक रेडियोधर्मिता उत्पन्न होगी जो १००० हिरोशिमा टाइप परमाणु बम की तुलना में अधिक हो सकती है ?  
यहाँ तक कि यदि हम परमाणु संयत्रों की संभाव्य दुर्घटना से बच भी जायें, तब भी परमाणु कचरे (नुक्लिअर वेस्ट्स) से छुटकारा पाना एक ऐसी समस्या है, जिसने अभी तक समस्त वैज्ञानिक मस्तिष्कों को चक्कर में डाल दिया है। क्योंकि, परमाणु-कचरा मिट्टी के साथ मिलकर नदियों में भी बहने का रास्ता खोज सकता है और ऐसे हानिकारक रेडियोधर्मी विकिरण को सैकड़ों वर्षों फैला सकता है, जो किसी भी प्राणी के जीवन के लिये घातक होते हैं। चीन ने,अपने देश में अमेरिकी परमाणु संयंत्रों से उत्पन्न परमाणु कचरे की डंपिंग के लिए स्थान उपलब्ध कराने की पेशकश की है, तथा इसके लिये उसने परमाणु ईंधन के लागत मूल्य से पाँच गुणा अधिक मूल्य चार्ज करने का प्रस्ताव भेजा है !  
यहाँ तक कि केवल एक 'भोपाल त्रासदी ' के बाद आधारिक तौर से  १७५४ लोगों को मृत, ७४११ लोगों को अमाशय-अल्सर आदि उदर-सम्बन्धित रोग से ग्रस्त, ३३७२ व्यक्तियों को नेत्र-सम्बन्धी रोगों से तथा २५०० व्यक्तियों को गम्भीर श्वसन-रोग या फेफड़ों की बीमारी से ग्रस्त घोषित किया गया था। एमआईसी से प्रभावित माताओं ने कितने ही मृत बच्चों को जन्म दिया था ! क्या हमलोग इस बात की कल्पना भी कर सकते हैं कि भविष्य में परमाणु कचरे से निकलने वाले धीमे और अगोचर रेडियो धर्मी विकिरण का लोगों पर कितना गम्भीर  प्रभाव पड़ सकता है ! औद्योगिक कचरे को उनमें प्रवाहित करने से हवा, मिट्टी, और नदियों का पानी तो पहले से ही, इतना अधिक प्रदूषित हो गया है कि उसके परिणाम स्वरूप कई लोगों की मृत्यु तक हो जाती है। यहाँ तक कि नदी में रहने वाली मछलीयां भी पारा, कैडमियम, आदि अन्य बहुत सी हानिकारक धातुओं के द्वारा प्रदूषित  हो गयी हैं ।
नाजियों द्वारा ४  लाख लोगों के  मानव-निर्मित नरसंहार के बाद, शायद मानव-जीवन की सर्वाधिक हानी
जापान के परमाणु विध्वंश में वैज्ञानिक ज्ञान की सहायता से हुई थी। जिसमें एक साथ २,००,००० लोगों की जानें सीधी चली गयी थी और असंख्य लोग पीढ़ियों से कष्ट झेलते आ रहे हैं। इंगलैंड के बर्मिंघम विश्व-विद्यालय में -इस विषय पर १९४० ई० में ही 'परमाणु बम विकसित करने की व्यवहार्यता' पर एक दुर्भाग्यपूर्ण खोज हुई थी। 
दो वैज्ञानिकों ने अपने संयुक्त शोध-पत्र में ने समझाया था कि कैसे यूरेनियम -235 की एक छोटी राशि से परमाणु बम के रूप में एक ऐसा हथियार विकसित किया जा सकता है, जिसके द्वारा  द्वितीय विश्व युद्ध को भी जीता जा  सकता है। उनमें से एक रुडोल्फ पेरेल्स (जो १९०७ में बर्लिन में जन्मे थे) आज भी जीवित हैं [Sir Rudolf Peierls (1907-1995) यह निबन्ध विवेक-जीवन में १९८७ में प्रकाशित हुआ था] इस खोज के लिये उन्हें ब्रिटेन की महारानी द्वारा नाइट की उपाधि भी प्रदान की गयी थी। वे परमाणु-बम बनाने में अमेरिकी वैज्ञानिकों को सहायता करने के लिये अपने सहयोगी वैज्ञानिक के साथ संयुक्त राज्य अमेरिका चले गये थे। एवं १६ जुलाई १९४५ को हिरोशिमा और नागासाकी प्रकरण से कई सप्ताह पहले ही, यह परमाणु बम जो भयावहता ला सकता था, उसके साक्षी बने थे। वे दोनों स्वयं सेमेटिक-विरोधी नाजीवाद से पीड़ित शरणार्थि थे, और इस भय से त्रस्त थे कि कहीं जर्मनी ही परमाणु-बम का प्रथम विस्फोट नहीं कर दे। इसीलिये उन्होंने उसके डिज़ाइन तकनीक आने से पहले ही, अमेरिका को अपना डिजाइन तकनीक प्रदान करके जर्मनी से आगे कर दिया था। 

क्या-क्या हो सकता है !
 Things to Come 
अंतरिक्ष-विज्ञान के क्षेत्र में एक छोटी सी विशेषज्ञता प्राप्त करते ही, कहने को तो केवल आत्मरक्षा के लिये, किन्तु हमलोग अब 'स्टार वार्स' के लिए भी तैयारी कर रहे हैं। और न केवल संयुक्त राज्य अमरीका, बल्कि  U.S.S.R. आज का 'रशियन फ़ेडरेशन' या रूस भी गुप्त रूप से इस प्रोजेक्ट पर कार्य कर रहा है।
(Union of Soviet Socialist Republics. १९८० के दशक से यह आर्थिक रूप से क्षीण होता चला गया और १९९१ में रूस का विघटन हो गया जिसके फलस्वरूप अब 'स्टार वार्स' का खतरा टल गया है। )
हाल ही में यह पता चला कि ६० वर्षों से लागु जिनेवा प्रोटोकॉल के बावजूद विश्व के तीस देशों के पास खतरनाक रासायनिक हथियार हैं । उनके पास जैविक हथियार भी हैं। लेजर बीम की प्रयोज्यता सर्जरी के लिये बहुत उपयोगी सिद्ध हुई है, किन्तु युद्ध प्रयोजनों के लिये  उसकी अथाह शक्ति का इस्तेमाल करने की सम्भावना विश्व- शांति के लिए एक बहुत बड़ा खतरा बन गया है। 
आतंकवादियों के द्वारा विमान अपहरण, बूबी ट्रैप्स, लैंड माइंस का प्रयोग, अत्याधुनिक हथियारों से पर-मतावलम्बियों का नर-संहार कर देना  देख कर  बार-बार मन में यह सवाल उठता है कि, पता नहीं वे किस सीमा तक नीचे गिर  सकते हैं? यह चिंता खास कर तब और बढ़ जाती है जब आतंकवादी बच्चों के साथ ३२९ लोगों के साथ उड़ान भर रहे एक जम्बो जेट को भी अटलांटिक महासागर में डुबो देते हैं। हाल में ही एक बहुत परेशान कर देने वाली खबर जोर पकड़ रही है कि हमारा एक पड़ोसी देश आतंकवादियों को परमाणु हथियार भी उपलब्ध करवाने पर विचार कर रहा है ! दक्षिण अफ्रीका में रंगभेद-नीति के आधार पर दंगा-फ़साद चलता रहता है, और ब्रिटेन में छिटपुट रूप से नस्लीय हिंसा होते रहना भी मानवसमाज की रुग्ण मानसिकता के लक्षण हैं।    
शोधकर्ताओं ने, यह खोज निकाला है कि पृथ्वी से २२,००० मील ऊपर सूर्य की किरणें बहुत अधिक प्रखर होती हैं, इसीलिये उस दूरी पर अवस्थित 'स्पेस-बेस्ड सोलर पैनल्स' बहुत अधिक सौर ऊर्जा को संग्रहित कर सकते हैं। अतः भविष्य में डीजल और कोयले जैसे 'फॉसिल फ्यूल्स (जीवाश्म ईंधन को जलाकर धरती के वातावरण को कार्बन डाइऑक्साइड से और अधिक प्रदूषित किये बिना, अंतरिक्ष में 'रिन्यूएबल एनर्जी' अक्षय सौर ऊर्जा संसाधन को विद्युत् शक्ति में रूपांतरित करने वाले संयत्रों को स्थापित कर पृथ्वी के प्रत्येक व्यक्ति के लिए विद्युत् शक्ति की (पेरेनियल सप्लाई-24/7 ऊर्जालगभग सार्वकालिक 
विश्वसनीय आपूर्ति को सुनिश्चित बनाया जा सकता है। 
यहाँ तक कि विभिन्न वस्तुओं का निर्माण करने के लिये अंतरिक्ष में ही कारखाने भी स्थापित किये जा सकते हैं। एवं रिहायसी मकानों को भूमि तल के नीचे बनाकर हमलोग पृथ्वी के ऊपर उपलब्ध जमीन को व्यापक तौर से केवल खेती के लिये ही उपयोग में ला सकते हैं । जो कोई भी कार्य बार बार दोहराते रहने से मनुष्य को कुंठित करने या थका देने वाला प्रतीत होता हो, उसे करने के लिये यंत्र-मानवों (रोबोट्स) का निर्माण किया जा सकता है। और इस प्रकार सभी प्रकार की सुख-सुविधाओं की प्रचुर मात्रा में आपूर्ति होने से, मनुष्य के पास इतना खाली समय होगा कि इस जीवन से जितनी इच्छा हो उतना आनंद लेने के लिये मुक्त हो जायेगा!     
इक्कीसवीं सदी में विज्ञान कहाँ तक जा पहुँचेगा, इस सहस्त्राब्दी के विचार को अनुमान के आधार पर उसकी एक रूप-रेखा मानव-मन के समक्ष पहले से ही प्रस्तुत किया जा रहा है। कुछ लोग तो ऐसी आशा भी रखते हैं कि एक दिन ऐसा आएगा जब रोबोट्स देख सकेंगे, सुन सकेंगे, विचार कर सकेंगे और न्याय भी करेंगे ! किन्तु तब मनुष्य क्या करेगा ? ऐसा सोचना क्या बेतुका नहीं है ?  
यन्त्र-मानव 
The Robot 

यह आशंका भी जतायी जा रही है कि ये रोबोट्स ' मनुष्यों को तकनीकी रूप से बेरोजगार बना देने का खतरा' भी अपने साथ लायेंगे, जिसके फल स्वरूप मनुष्यों की 'आर्थिक सुरक्षा और आत्म-सम्मान की
भावना' समाप्त हो जायेगी। इस स्थिति से बचने के लिये इसहाक असिमोव (1920 -1992) [बोस्टन विश्वविद्यालय में जैव रसायन के प्रोफेसर तथा साइंस फिक्शन के प्रसिद्द अमेरिकी लेखक] अपनी पुस्तक 'मॉडर्न मैच्यूरिटी' में सुझाव देते हैं, कि हमें जेनेटिक इंजीनियरिंग का प्रयोग करके 'होमो सेपियन्स' अर्थात मानव प्रजाति को 'होमो  सूपीरीअर्स ' या उन्नततर मानव प्रजाति में रूपांतरित करना चाहिये। ताकि जब रोबोट्स उन समस्त कार्यों को कर रहे होंगे जो केवल मनुष्य ही कर सकता है, तब मनुष्य के पास भी करने के लिये कोई कार्य तो बचा रहेगा! इस प्रकार के विचार को ही 'वैज्ञानिक अन्धविश्वास' या ख्याली पुलाव पकाना कहते हैं, जो वास्तव में मनुष्य क्या है -इस बात की जानकारी नहीं रहने के कारण उत्पन्न होती है।  

नीत्शे का सुपरमैन: [फ्रेडरिक नीत्शे (Friedrich Nietzsche : १८४४-१९०० ) एक जर्मन दार्शनिक था, जो संसार के समक्ष ढोंगी आस्तिक होकर रहने की बजाय, स्वयं को एक नास्तिक कहलाना अधिक उचित समझता था। नीत्शे का अतिमानव आसुरी लक्षणोँ से युक्त है। उसमें दया, प्रेम, करुणा, सहानुभूति जैसे कोमल भावनाओं का सर्वथा अभाव है। वह अत्यन्त पाषाणी हृदय, क्रूर निर्दयी तथा प्रचण्ड शक्तिशाली पुरुष है।] नीत्शे का अतिमानव 'दी ब्लॉन्ड बीस्ट' (सुनहरे बालों वाला पशु-मानव)- इसी श्रेणी में आता है।
(क्योंकि पाश्चात्य दार्शनिक यह नहीं जानते कि,) मनुष्य एक 'फिनिश्ड प्रोडक्ट' (पूर्ण निर्मित उत्पाद) नहीं है। यह विश्व मनुष्यों के लिये एक वर्कशॉप (कारखाने) के जैसा है, जिसमें तप कर मनुष्य 'पूर्णता' (फिनिश) को प्राप्त होता है। जब कोई व्यक्ति जगत में रहते हुए "3H निर्माण" की प्रक्रिया से गुजरता है, तब हमें 'यथार्थ मनुष्य ' रूपी वह फिनिश्ड प्रोडक्ट प्राप्त होता है। क्योंकि तब वह अपनी अनंत संभावनाओं को अभिव्यक्त करने में समर्थ होता है,[अर्थात वह ब्रह्म (पूर्ण)  को जानकर साधारण मनुष्य से 'ब्रह्मविद मनुष्य' या यथार्थ मनुष्य बन जाता है!]
मनुष्य के यथार्थ स्वरूप के विषय में हमारी अज्ञानता, अधपके केक को ही असली केक समझने जैसा है; जो हमारे मन में किसी मनुष्य के प्रति डिस्टेस्ट,वैमनस्य या घृणा का भाव उत्पन्न करता है। जब हम 'मनुष्य वास्तव में क्या है '- यह नहीं जान पाते हैं, तभी हमलोग जेनेटिक इंजीनियरिंग की सहायता से 'होमो सूपीरीअर' को निर्मित करने बात सोचने लगते हैं।
किन्तु रोबोट - एक इलेक्ट्रॉनिक कंप्यूटर के अतिरिक्त और कुछ भी नहीं हैं, और कंप्यूटर केवल गणना करने में सक्षम होता हैं - हाँ, निश्चित रूप से उसकी गति अत्यंत असाधारण होती है। यहाँ तक कि कम्प्यूटर भी अलग- अलग हस्तलिखित आलेखों या विभिन्न स्वरों में बोले गए विभिन्न प्रकार की आवाजों को समझ नहीं सकता। अपने आत्म-विश्वास और विवेक-प्रयोग करने या त्वरित-निर्णय लेने की क्षमता में कमी होने के कारण, ही हम लोग यह कल्पना करते हैं कि रोबोट विचार करने में भी सक्षम हो जायेगा। विकास के सभी मोर्चों पर तरक्की करने के साथ ही साथ हम लोग धीरे धीरे अपना 'कॉमन सेन्स' या सामान्य बुद्धि भी खोते जा रहे हैं। 
कारण बिल्कुल स्पष्ट है - और वह यह है कि " मनुष्य कभी किसी ऐसी वस्तु का निर्माण नहीं कर सकता जो स्वयं मनुष्य की तुलना में अधिक आश्चर्यजनक हो !"  क्या कोई ऐसा रोबोट कभी निर्मित किया जा सकता है जिसमें प्रेम और ममता भी हो ? क्या कोई ऐसा इलेक्ट्रॉनिक गैजिट (मशीन) निर्मित किया जा सकता है जिसके पास दूसरों के सुख-दुःख को अनुभव करने वाला एक सहानुभूति-सम्पन्न हृदय भी हो ? क्या कभी कोई ऐसा रोबोट बनाया जा सकता है, जो सौन्दर्य और कला की प्रशंसा करने या मूल्यांकन करने में भी सक्षम हो ? नहीं, कभी नहीं ! 
दूसरी ओर किसी दिन रोबोट युद्ध में समस्त प्रकार की विनाशकारी गति-विधियों को क्रियान्वित करने में सक्षम हो सकते हैं । यह रोबोट या यन्त्र-मानव इस प्रकार से प्रोग्राम्ड होगा कि वह युद्ध का प्रारम्भ करने वाले के पक्ष में मानव-जीवन को न्यूनतम नुकसान पहुँचायेगा, वहीँ दूसरे पक्ष के मानव-जीवन को भयानक तरीके से कई गुना अधिक नुकसान पहुँचायेगा। इसहाक असिमोव यह स्वीकार करते हैं कि " हमें निश्चित रूप से यह समझ लेना चाहिये कि मनुष्य ने लगभग प्रत्येक प्रकार के टेक्नोलॉजिकल एडवांस को अपनी 
विध्वंशकारी लालसा को तुष्ट करने के लिए परिवर्तित कर लिया है। 

 सही विकल्प की चयन-क्षमता ही विजडम है !  
 (The Choice from Wisdom)
इस बात में कोई शक नहीं कि वैज्ञानिक प्रगति के साथ दुनिया भी छोटी होती जा रही है, और आने वाले वर्षों में इसका और भी छोटा होते जाना जारी रहेगा। किन्तु, क्या इसके द्वारा सचमुच मानवीय एकत्वबोध को बढ़ावा मिलेगा ? कदापि नहीं ! आइये हम देखते हैं कि साइंस फिक्शन के लेखक इसहाक असिमोव इस संभावना के विषय में क्या कहते हैं :
" अगले २५ वर्षों में हमलोग यह देखेंगे कि दुनिया के सभी देश अभी जितना सम्भव प्रतीत होता है, उससे कहीं अधिक एकजुट हो जायेंगे; और एकजूटता किसी आदर्शवाद का परिणाम नहीं होगा, बल्कि सम्पूर्ण जगत में विद्युत् ऊर्जा की आपूर्ति को सुनिश्चित बनाने के एक संयुक्त प्रयास का परिणाम होगा।" वे आगे कहते हैं - " या तो हमलोग इतने बुद्धिमान हो सकते हैं,कि अपने भविष्य का निर्माण कर सकें, और हमलोग इतने मूर्ख भी हो सकते हैं कि सही विकल्प का चयन भी नहीं कर सकें। " 
किन्तु,रोबोट्स के डिजाइन में काफी सुधार होने के बावजूद, ' दिस चूजिंग कैन नॉट बी लेफ्ट टू रोबोट्स' 
यदि कम्प्यूटर की सहायता से मानव-मन को शांत और संयत कर पाना कभी सम्भव भी हो पाता, तब भी  (श्रेय-प्रेय) चयन के कार्य को किसी रोबोट के ऊपर नहीं छोड़ा जा सकता।  और जब तक मनुष्य स्वयं को पूर्ण रूप से विकसित नहीं कर लेता, तब तक वह सही विकल्प का चयन भी नहीं कर सकता।  तथा  मनुष्य के समुचित विकास  (मान- हूश 'मनुष्य' जिसे अपनी मानवोचित मर्यादा का होश बना रहता है) का कार्य केवल आध्यात्मिकता के द्वारा ही सम्भव हो सकता है।   
यह कार्य सिर्फ तथाकथित धर्मों के माध्यम से नहीं किया जा सकता है - चाहे वह हिन्दूइज्म, क्रिश्चियनिटी, इस्लाम, या कोई अन्य नाम वाला धर्म भी क्यों न हो ! इस मान्यता का एक सुस्पष्ट प्रमाण इस तथ्य में देखा जा सकता है कि मानव-कल्याण की दृष्टि से किये गए लगभग जितने भी महत्वपूर्ण वैज्ञानिक आविष्कार अभी तक किये गये हैं, अंततोगत्वा उस ज्ञान का प्रयोग मनुष्यों को प्राणघातक नुकसान पहुँचाने के लिये ही किया गया है। तथा विश्व के जिन देशों में वैज्ञानिक आविष्कारों का दुरूपयोग हुआ है उन सभी देशों में इसी प्रकार के एक तथाकथित धर्म - क्रिश्चियनिटी  का ही प्रभुत्व है। (इसीलिये कहा जाता है - बिलीव इन क्राइस्ट नॉट इन क्रिश्चियनिटी ऑर चर्चिनिटी)      
मनुष्य को मनुष्य के द्वारा मौत के घाट सुला देने की जितनी घटनायें पूर्व में हो चुकी हैं, उनको यदि छोड़ भी दें, तो अभी हाल में ही जब अफ्रीका में भूख से १० लाख लोगों की मृत्यु हो गयी थी तब उसके प्रति वैश्विक 
उदासीनता और निष्ठुरता  को देखने से हमारी (तथाकथित धर्मों की) विकल्प-चयन क्षमता की कलई खुल जाती है। यह सब इसीलिये है कि हमलोग अब विज्ञान के ऊपर बहुत अधिक निर्भर करते हैं, और 
आध्यात्मिक ज्ञान की अनिवार्यता को स्वीकार नहीं करते हैं। 
इसीलिए  सम्पूर्ण मानवता के कल्याण की चिंता न कर अपने समस्त ज्ञान का उपयोग केवल एक खास वर्ग के हितलाभ को ही ध्यान में रखकर करते हैं। 'दी राइट चॉइस आउट ऑफ विजडम' - विजडम, प्रज्ञता या विवेक-प्रयोग करने के बाद सही विकल्प चयन करने का सामर्थ्य,जिसका उल्लेख रसेल या असिमोव करते हैं - वैसी प्रज्ञता केवल वैज्ञानिक उन्नति करने भर से नहीं प्राप्त होती, भले ही हम विज्ञान के पीछे कितना ही भागते रहें। ऐसी प्रज्ञता (विवेक-प्रयोग करके श्रेय-प्रेय में सही विकल्प का चयन करने की क्षमता) केवल आध्यात्मिकता से ही प्राप्त होती है। 
हम लोगों ने ब्रिटिश दार्शनिक और नोबेल पुरस्कार विजेता बर्ट्रेंड रसेल (1872 - 1970)  द्वारा "इम्पैक्ट ऑफ़ साइंस ऑन सोसाइटी " (समाज पर विज्ञान का प्रभाव) में दी गयी उस चेतावनी पर अभी तक कोई ध्यान नहीं दिया है,जहाँ वे कहते हैं - " हमलोग इस समय ह्यूमन स्किल (मानवीय कौशल) रूपी साधन (उपाय) और मानवीय अज्ञानता (folly) की समाप्ति रूपी साध्य (मनोरथ) के बीच चलने वाली एक दौड़
के मध्य में खड़े हैं। "अनलेस मेन इनक्रीज इन विजडम ऐज मच ऐज इन नॉलेज"- मानव ने भौतिक विज्ञान (नॉलेज-अपरा विद्या) के क्षेत्र में जितनी प्रगति कर ली है, यदि उतनी ही प्रगति वह प्रज्ञता (विजडम - परा विद्या या विवेक पूर्वक त्वरित निर्णय लेने या विकल्प चयन की क्षमता) में भी नहीं कर लेता, तब तक उसके ज्ञान में वृद्धि उसके दुःख में भी वृद्धि का कारण बनेगी।" 
एक रुसी कहावत है,‘If you can’t find wisdom at home, you won’t be able to buy it abroad.’ अर्थात ' यदि आप अपने घर (हृदय) में छिपे विवेक (प्रज्ञता या विज्डम) को नहीं खोज सके, तो आप इसे विदेशों से खरीदने में भी सक्षम नहीं होंगे। " पाश्चात्य वैज्ञानिक लोग ज्ञान (नॉलेज) होने के बावजूद, प्रज्ञता (विवेक-प्रयोग क्षमता या विकल्प चयन क्षमता) में कितने दरिद्र हैं; इस सच्चाई को उस प्रख्यात वैज्ञानिक ने पर्याप्त रूप में दिखला दिया है, जो १९४० के दशक में परमाणु बम नाटक में घनिष्ट रूप से सम्बद्ध था।  
जॉन हेनरी मैनले [ ( 1907 - 1990) अमेरिकी भौतिक विज्ञानी, जिन्हें  रॉबर्ट ओपेनहाइमर ( 1904 - 1967) मैनहट्टन परियोजना के दौरान अमेरिकी भौतिक विज्ञानी और "परमाणु बम के जनक" का दाहिना हाथ कहा जाता था- ने कहा था: " हम यह अच्छी तरह से जान रहे थे कि हमलोग जिस हथियार का निर्माण कर रहे थे वह नरसंहार का  एक भयानक साधन है।  किन्तु हम लोग तब समय  के भावावेश में बह गए थे। हम वैज्ञानिक लोग भी बाकी लोगों से भिन्न नहीं हैं। हमलोग भी देश-प्रेम की अंध-भक्ति द्वारा उतने ही बंधे हुए हैं। हमलोग भी विवेक-हीनता द्वारा आसानी से ग्रस्त कर लिये जाते हैं। " 

अदभुत आध्यात्मिक घटना 
(The Spiritual Phenomenon)
आधुनिक जगत में जब इस भौतिकवाद की दौड़ के लिये 'प्रस्थान' करने का संकेत हो चुका था, जब विवेक की ज्योति (लाइट ऑफ विजडम) क्षीण होने लगी थी, जब अज्ञान का अँधेरा उत्तरोत्तर गहराता जा रहा था, जिस समय पर-मतावलम्बियों के प्रति घृणा मानवता का मुँह चिढ़ा रही थी, जब मनुष्य के मन की शांति लुप्त होती जा रही थी, जब मनुष्य की महिमा और आध्यात्मिकता के ऊपर से विश्वास का परित्याग किया जा रहा था, जब मनुष्य की चिंता का प्रमुख विषय सम्पूर्ण मानवजाति का कल्याण, नहीं प्रतीत हो रहा था, जब प्रेम की अपेक्षा ईर्ष्या और वैमनस्य का भाव अधिक तेजी से बढ़ने लगा था, स्वार्थपरता को सहानुभूति से उत्कृष्ट समझा जा रहा था, परिग्रह और भुक्ति को ईश्वर-भक्ति से श्रेष्ठ माना जा रहा था, आमोद-प्रमोद (मौज-मस्ती) ही समस्त कार्यों का उद्देश्य बन गया था, --तब, भारत के एक उपेक्षित स्थान में एक शिशु का जन्म हुआ था; जिन्हें बाद के जीवन में श्री रामकृष्ण के रूप जाना जाता है!     
आध्यात्मिकता किसे कहते हैं, यह श्रीरामकृष्ण के जीवन को देख कर समझा जा सकता है, तथा स्वामी विवेकानन्द ने उसी आध्यात्मिकता का उपदेश दिया है। श्री रामकृष्ण परमहंस देव हिन्दूइज्म का उद्धार करने, या किसी 'अमुक' नाम वाले धर्म या 'तुमुक' नाम वाले धर्म को स्थापित करने के लिये आविर्भूत नहीं हुए थे; बल्कि अपने जीवन द्वारा सभी धर्मों के सारतत्व (आध्यात्मिकता) को ही पुनर्स्थापित करने के लिये अवतरित हुए थे, ( इस बात को पूर्ण रूप से समझने में अभी और लम्बा समय लगेगा।) इसीलिये वे सभी धर्मों में निहित सत्य को देख सकते थे। 
आधुनिक विश्व को प्रज्ञता (विजडम) की आवश्यकता है, यदि आप चाहें तो इसीको दर्शन या धर्म भी कह सकते हैं ! विश्व-मानवता के कल्याण के लिये करने के विकल्प का चयन करने में- ज्ञान (अपरा विद्या) का सही उपयोग करने के लिये  यह प्रज्ञता (परा विद्या श्रेय-प्रेय विवेक क्षमता) ही मनुष्य की सहायता कर सकती है। 
जिस 'मानवीय अज्ञानता' (अविद्या) के कारण ही मनुष्य के ' दुःख में वृद्धि' होती है, उससे बचने का उपाय है, विवेक-प्रयोग। प्रज्ञता (विजडम-सही विकल्प चयन क्षमता) ही वह फिलॉसफी या धर्म है जो वैज्ञानिक-तर्क की कसौटी पर खरा उतर सकती है। "विजडम कुड नॉट ओनली सूद दी सोल बट वुड ऑल्सो सैटिस्फाई दी इंटेलेक्ट" यह विजडम (सत-असत विवेक क्षमता) सही विकल्प का चयन करने का सामर्थ्य केवल आत्मा (हर्ट) के लिये ही शांतिदायक नहीं होगा, बल्कि यह बुद्धि (हेड) को भी संतुष्ट करेगा। 
यह विजडम या प्रज्ञता (ब्रह्ममय जगत का बोध), विज्ञान को वह 'समत्व की दृष्टि' भी प्रदान कर सकता है, जिसका उसमें अभाव है, तथा विज्ञान द्वारा मानव-कल्याण के लिये जो कुछ भी प्राप्त हो सकता है (उसकी गलतियों के आलावा) उन सब को अपने प्रभाव क्षेत्र में लपेट लेगी।
'दिस  रिलिजन ऑर फिलासफी वाज लीव्ड बाइ श्री रामकृष्ण'इसी धर्म या दर्शन (विजडम) को श्री रामकृष्ण ने अपने जीवन में उतार कर दिखलाया था, और स्वामी विवेकानन्द के द्वारा इसका प्रचार किया गया था। "दिस मे बी कॉल्ड वेदान्ता, दैट  कैन सेव दी मॉडर्न वर्ल्ड फ्रॉम ए मैन-मेड कटैस्ट्रफी" -इसी को वेदान्त भी कहा जा सकता है, जो आधुनिक विश्व को मानव-निर्मित महाप्रलय (कटैस्ट्रफी) से बचा सकता है, तथा उसके इक्कीसवीं सदी में प्रवेश को बिना किसी कष्टदायक धक्का के सुरक्षित भी रख सकता है।
आधुनिक वैज्ञानिक क्रांति से उत्पन्न -'दी बैले ऑफ़ ब्लडलेस कैटगॉरी'- 'रक्तहीन श्रेणी की नृत्य-नाटिका' ने मानव-मन को सम्पूर्ण रूप से मथ कर रख दिया है। जिसके फलस्वरूप उसकी विषाक्त रुग्णता बहुत हद तक बाहर निकल चुकी है, और इसी प्रक्रिया में आध्यात्मिक क्रांति का द्वार भी खुलता जा रहा है। मनुष्य के शुष्क हृदय को शांति प्रदान करने के लिये, ' फ्रॉम दी डेप्थ्स ऑफ़ दी सेल्फ-सेम ह्यूमन माइंड'
आत्मस्वरूप मानव-मन की गहराई में स्थित निचली परतों (चित्त-सबकॉन्शस माइंड) से धीरे धीरे अमृत ऊपर की ओर आ रहा है। '  
मनोवृत्ति का मुड़ना   
 The Turn
विज्ञान (कोआर्डिनेट ज्योमेट्री) हमें बतलाता है कि यदि हम एक रेखा को  बहुत अधिक लम्बाई (अनंत) 
तक खींचते चले जायें तो  तो वह प्रारंभिक छोर से मिलने के लिये वृत्ताकार रूप धारण कर लेती है। जो लोग अभी आध्यात्मिकता से बहुत दूर चले गये हैं, और भौतिकवाद में गहराई तक डूबे हुए हैं, आध्यात्मिकता के पास,शायद वैसे ही लोग दूसरों से पहले वापस भी आयेंगे। इसीलिये यदि, आधुनिक विश्व में घोषित तौर पर जितने समाजवादी या कम्युनिस्ट देश हैं, वे इक्कीसवीं सदी में किसी दिन आध्यात्मिकता की आवश्यकता को स्वीकार कर लें,तथा मानवता की समग्र कल्याण के लिये आध्यात्म को अपनाने वाले अन्य राष्ट्रों के बीच सर्वप्रथम देश बन जायें जो, तो इसमें किसी को आश्चर्यचकित नहीं होना चाहिये। इस दिशा में कुछ संकेत (सीरिया वार से ?) क्रमशः स्पष्ट भी होते जा रहे हैं।

चीन में - हरिभजन !
 In China
चीनी सरकार ने १९६६-७६ की सांस्कृतिक क्रांति दौरान में जहाँ समस्त धार्मिक प्रथाओं पर प्रतिबन्ध लगा दिया था, वहीँ १९८३ में प्रकाशित चीनी संविधान के नये संस्करण से इन शब्दों-‘दी स्टेट शैल प्रापगैट ऐथीइज़म'- 'राज्य नास्तिकता (अनीश्वरवाद) का प्रचार करेगा' को हटा दिया गया है। सरकारी चीनी कम्युनिस्ट पार्टी के मुखपत्र 'पीपुल्स डेली ' ने दिसम्बर १९८४ के संपादकीय (फ्रंट-पेज एडिटोरियल)  में टिप्पणी की थी : ‘ टाइम्स आर चेंजिंग, इन टर्म्स ऑफ़ मार्क्सिज्म एंड लेनिनिज़म, वी कैन नॉट बी डागमेटिक.' -अर्थात  समय बदल रहा है, अब हम लोग मार्क्सवाद और लेनिनवाद के संदर्भ में हठधर्मी नहीं हो सकते। संपादकीय में पुराने ढर्रे को छोड़ने का परामर्श  देते हुए कहा गया था , " अन्यथा, हम लोग वास्तविकता (सत्य) के साथ संपर्क खो देंगे, और जमाने से पीछे छूट जायेंगे।" चीन की कम्युनिस्ट सरकार द्वारा संचालित 'चाइना न्यूज सर्विस' - ‘Thong GuoXin Wen He’ में  'चाइनीज़ पोलिटिकल कंसल्टेटिव कांफ्रेंस' के एक सदस्य श्री झाओ फ्यूशान को सम्मेलन के समापन सत्र (८ अप्रैल १९८५) में दिए भाषण को उद्धिर्त करते हुए कहा गया था, " किसी भी देश का साहित्य, कला, वास्तु-शिल्प, दर्शन, नैतिकता, रीति-रिवाज, और जीवन-पद्धति आदि वहाँ के धार्मिक प्रभाव के द्वारा कमो-बेश अवश्य प्रभावित होते हैं। " 
'धर्म पूरी तरह से आध्यात्मिक अफीम जैसा है'- यह दृष्टिकोण एक अवैज्ञानिक और बिल्कुल अधूरा दृष्टिकोण है। धार्मिक मूल्यों का अन्धाधुन्ध विरोध सर्वथा अनावश्यक और हानिकारक सिद्ध होता है। गीता की हजारों प्रतियाँ चीन जा रही हैं। संस्कृत शास्त्रों एवम विवेकानन्द साहित्य का चीनी भाषा में अनुवाद भी किया जा रहा है।
उसी चीनी समाचार पत्र 'पीपुल्स डेली ' ने एक महीने पहले अपने सम्पादकीय में कर्मियों को कड़ी चेतावनी देते हुए जो कुछ लिखा था, उसे न तो हल्के लेना चाहिये और न निम्नलिखित शब्दों को पढ़ते ही किसी को एकदम से निष्कर्ष पर पहुँच जाना चाहिये। उसमें कहा गया था - " कुछ संस्थानों में कार्य करने वाले लोग कह रहे हैं: ' यदि तुम मुझसे अमुक काम करवाना चाहते हो, तो बदले में मुझे क्या दोगे ? दूसरे शब्दों में यदि उन्हें प्रचूर धन प्राप्त होगा तभी वे इसे करेंगे। यदि उनके मन मुताबिक पर्याप्त धन नहीं मिला तो तुम्हारा कोई काम नहीं होगा। पूरे राज्य और इसकी जनता की कीमत पर चन्द लोगों के भौतिक लाभ के लिये, ऐसी सोच रखना तो वास्तव में स्वार्थपरता की पराकाष्ठा है। निश्चित रूप से भौतिकवाद को समाजवाद नहीं कहा जा सकता। भौतिकवाद (चार्वाक-मत) बिल्कुल असहनीय है। शायद इस बात को जान-बूझकर नहीं लिखा गया कि यह विचार,  हू-ब-हू स्वामी विवेकानन्द के विचारों की अनुगूँज है, जब वे 
'समाज ऊपर वेदान्त का प्रभाव' की व्याख्या कर रहे थे। बीजिंग रिव्यू एक अलग संदर्भ में कहता है, 'धन की लालसा अनिवार्य रूप से लोगों को पथभ्रष्ट कर देती है।' 
रूस में हरिभजन 
 (In Russia )
टॉल्स्टॉय ने स्वामी विवेकानंद के राजयोग और श्री रामकृष्ण परमहंस के उपदेशों को पढ़ने के बाद अपने हृदय के उद्गारों को व्यक्त करते हुए कहा था - ‘देयर आर नोव्हेयर सच ब्यूटीफुल आइडियाज.’ -इस तरह के सुंदर विचार और कहीं से प्राप्त नहीं होते! उनकी लाइब्रेरी में रुसी भाषा में लिखित पुस्तक 'वॉयसेज  ऑफ़ पीपल्स' भी रहती थी। उसमें स्वामी विवेकानन्द के दो निबन्ध दिये गए हैं। टॉल्सटॉय स्वयं १९०८ में स्वामी विवेकानन्द द्वारा २३ मार्च, १९०० को सैन फ्रांसिस्को में दिये व्याख्यान 'The Soul And God' विषय पर दिये व्याख्यान (हिन्दी खण्ड ८/'जीवात्मा और परमात्मा') का रुसी भाषा में अनुवाद करना चाहते थे। तथा उन्होंने स्वामी विवेकानन्द के अन्य गुरु भाई स्वामी अभेदानन्द द्वारा लिखित पुस्तक 'The Way to Blessedness' (परमानन्द की प्राप्ति का मार्ग) का रुसी भाषा में अनुवाद किया भी था।   
ईवा इल्योस्ट्र्निक के शोध से यह पता चलता है कि याकोव ए.के. पोपोव (१८४४-१९१८)  भारत आकर स्वामी विवेकानन्द से मुलाकात किये थे, तथा उनके विचारों से प्रभावित होकर १९०६ से १९१४ के बीच स्वामी जी द्वारा लिखित चार योगों की पुस्तकों का रुसी भाषा में अनुवाद किया था। हाल ही में ' सोवियत एनसायक्लोपेडिया पब्लिशर्स ऑफ़ मास्को' द्वारा रूस में एक 'फिलोसॉफिक इंसायक्लोपेडिक डिक्शनरी' प्रकाशित किया गया है। इस पुस्तक के 'इंडियन सेक्शन' में वेद-वेदान्त तथा श्रीरामकृष्ण और स्वामी विवेकानन्द की शिक्षाओं पर विशेष बल दिया गया है। बहुत पहले ही गीता और उपनिषदों का रुसी भाषा में अनुवाद हो चुका है। 
प्रख्यात भारतविद नतालिया गुसेवा ने रामायण को स्टेज पर प्रस्तुत करने के लिये एक स्क्रिप्ट लिखा था, जिसका मंचन मास्को के ' सेंट्रल चिल्ड्रन्स  थिएटर ऑफ मास्को' (केंद्रीय बाल्य नाट्य-गृह)   में लगातार २५ वर्षों तक सफलता पूर्वक होता रहा है। इस नाटक को देखने के बाद एक छोटी सी बच्ची इतनी प्रभावित हुई कि उसने अपना बदल कर सीता रखना चाहा। उसके निर्देशक (तथा राम की भूमिका निभाने वाले कलाकार)  जी. पेचनीकोव ने कहा था, ' दी रामायण एंड दी महाभारत बिलॉन्ग टू दी इन्टायर ह्यूमैनिटी.' 
-अर्थात रामायण और महाभारत तो सम्पूर्ण मानवता की संपत्ति हैं ! ये दोनों महाकाव्य सत्य-मैत्री-न्याय और शांति के प्रति मनुष्य के शाश्वत तलाश को प्रदर्शित करते हैं.... आने वाली पीढ़ी में सच्चरित्रता और साहस उत्पन्न करते हैं, तथा बुराई के विरोध में निर्भीकता के साथ खड़े होने की शक्ति प्रदान करते हैं। 
रुसी शिक्षाविदों में भारतीय चिंतन को समझने तथा विशेष तौर से श्रीरामकृष्ण-विवेकानन्द वेदान्त परम्परा का अध्यन करने के प्रति रुझान तीव्रता से विकसित हो रहा है।  अभी हाल में ही कोलकाता में रूस के एकेडमी ऑफ साइंसेज, के ओरिएंटल अध्ययन संस्थान के एक वरिष्ठ रिसर्च फेलो, डॉ आर.बी. रेबाकोव ने कहा था, ' यह स्वामी विवेकानन्द के अथक  प्रयासों का ही नतीजा है कि हमारे पास बी.जी. तिलक और अरविन्दो घोष से लेकर महात्मा गाँधी और जवाहर लाल नेहरू तक उत्कृष्ट क्रांतिकारी नेताओं की प्रशंसनीय क्रिया-कलापों की एक सीधी शृंखला प्राप्त हुई थी। 
 यद्यपि विवेकानन्द को अक्सर एक गैर-राजनितिक व्यक्ति के रूप में देखा जाता है, तथापि भारत के लिये उनका प्रेम, गरीब और पददलित जनों का उत्थान करने की उनकी प्रबल इच्छा, उनके संदेशों की सार्वभौमिकता - ये सभी उनके  महान राजनितिक दृष्टि की ओर ईशारा करते हैं। इस निबन्ध में हमने जो कुछ दिखाने की चेष्टा की है, उसका समर्थन करते हुए डॉ. रेबाकोव कहते हैं - " हो सकता है कि भविष्य में हिन्दूइज्म एक धर्म के रूप में लुप्त हो जाये, किन्तु यह तब तक एक (मनुष्य -निर्माणकारी) आन्दोलन में अवश्य रूपांतरित हो जायेगा।   
निष्कर्ष 
 Conclusion
नई सदी में प्रवेश करने के बाद कहीं मनुष्य बेकार (आब्सलीट) तो नहीं हो जायेगा ? यदि हम लोग इस भय से आशंकित हों, तो भी हमें जेनेटिक इंजीनियरिंग के द्वारा किसी नई प्रजाति को उत्पादित करने की आवश्यकता नहीं होगी। 
किन्तु, इक्कीसवीं शताब्दी के ' यूनिफाइड वर्ल्ड' (एकीकृत जगत) में वास करने के लिये, अन्तःप्रकृति और बाह्यप्रकृति का स्वामी (master) बन कर, जो हम लोग वास्तव में हैं (ब्रह्म), वह बन जाने के लिये - हमें अपने दैनन्दिन जीवन में थोड़ा मानव अभियांत्रिकी का प्रयोग अवश्य करना पड़ेगा। ("वी मस्ट स्ट्राइव टु अप्लाई अ  लिटिल ह्यूमन इंजीनियरिंग- सर्वमंगल की प्रार्थना, मनःसंयोग, व्यायाम, स्वाध्याय और विवेक-प्रयोग ५ अभ्यास
अमेरिका से अपने गुरुभाई स्वामी रामकृष्णानन्द को १८९५ में लिखित एक पत्र में स्वामी विवेकानन्द ने 
 कहा था - " इस रामकृष्ण अवतार में समस्त प्रकार के नास्तिक विचार 'ज्ञान के तलवार' द्वारा नष्ट कर दिए जायेंगे, तथा सम्पूर्ण जगत भक्ति (उपासना) और प्रेम (डिवाइन लव) के द्वारा एकीकृत हो जायेंगे !" ४/३१७ 
 स्वामी विवेकानन्द ने १८९६ में ही 'दी अब्सोल्यूट एंड मैनिफेस्टेशन’ (हिन्दी -ब्रह्म एवं जगत)  विषय पर लन्दन में भाषण देते हुए कहा था - " आजकल यूरोप में भौतिकवाद की पताका फहरा रही है... यहाँ भारत में भी अद्वैतवाद का प्रचार साधारण लोगों में कभी होने नहीं दिया गया। संन्यासी लोग ही अरण्य में उसकी साधना करते थे, इसी कारण वेदान्त का एक नाम 'आरण्यक' भी हो गया। अन्त में भगवान की कृपा से बुद्धदेव ने आकर सर्वसाधारण के बीच इसी वेदान्त (अद्वैत धर्म) का  प्रचार किया, और सारा देश बौद्ध धर्म में दीक्षित हो गया। फिर बहुत समय बाद जब -' नास्तिक अनीश्वरवादियों एवं अज्ञेयवादीयों ' (एथीइस्ट्स  एंड ऐग्नास्टिक्स) ने सारे देश को ध्वंस करने की चेष्टा की - इस भौतिकवाद से भारत की रक्षा करने में, अद्वैत-धर्म फिर एकमात्र उपाय सिद्ध हुआ। इस प्रकार हम देख सकते हैं कि इस अद्वैतवाद ने दो बार भौतिकवाद से भारत की रक्षा की है
पहले, बुद्धदेव के आने से पूर्व, नास्तिकता अत्यन्त प्रबल हो उठी थी- यूरोप, अमेरिका के विद्वानों में आजकल जैसी नास्तिकता है बुद्ध के देहांत के ठीक १००० वर्ष पश्चात फिर उसी प्रकार की परिस्थिति उत्पन्न हुई। भीड़ की भीड़, जनसाधारण तथा अनेक प्रकार की नस्लों ने 'बुद्धिज्म' (बौद्ध धर्म) को ग्रहण कर लिया था। अतः जनता के घोर अज्ञानी होने के कारण बौद्ध धर्म का अपक्षय होना स्वाभाविक था। बौद्ध धर्म किसी जगत के शासक ईश्वर और उसके अवतरित होने उपदेश नहीं करता, अतः जनसधारण धीरे धीरे अपने देवी-देवता, भूत-प्रेत पुनः ले आये और अंत में भारतवर्ष में बुद्धिज्म नाना प्रकार के विषयों की खिचड़ी सा हो गया।  तब फिर से भौतिकवाद के काले बादलों से भारत का आकाश ढक गया -उच्चवर्ग या धनाड्य परिवार के लोग स्वेच्छाचारी और साधारण लोग अन्धविश्वासी हो गये। ऐसे समय में शंकराचार्य ने उठकर फिर से वेदान्त की ज्योति को जगाया! .... उन्होंने उपनिषदों के सिद्धान्तों को (चार महावाक्यों को) युक्ति और विचार की कसौटी पर कसकर, प्रणाली बद्ध रूप में लोगों के समक्ष रखे। "['दस हैज अद्वैत ट्वाइस सेव्ड इंडिया फ्रॉम मटीरीअलिज़म' "इट वाज  फाउंड आउट दैट अद्वैत वाज दी ओनली वे टू सेव इंडिया फ्रॉम मटेरिअलिज्म"] (२/ ९३-९४) 


[बुद्धदेव के अवतरित होने से पहले का भौतिकवाद (नास्तिकता) असंस्कृत प्रकार की थी, जो शिक्षा देती थी - खाओ,पीओ और मौज उड़ाओ ! ईश्वर, आत्मा या स्वर्ग कुछ भी नहीं है धर्म कुछ धूर्त, दुष्ट पुरोहितों की कपोल-कल्पना मात्र है,वैसी नहीं, वरन वह नास्तिकता तो इससे भी अधिक भयंकर थी ! जो कहती है केवल एक दृष्टिगोचर वस्तु-जड़ (M) का अस्तित्व है, ब्रह्म (E) का नहीं जबकि विज्ञान ने E=M सिद्ध कर दिया है !,    ...... बुद्ध ने वेदान्त को प्रकाशित किया, और जन-साधारण में उसका प्रचार करके भारतवर्ष की रक्षा की। 
" शंकराचार्य में हम अद्भुत बौद्धिक प्रतिभा पाते हैं, उन्होंने हर विषय पर 'बुद्धि की जारक ज्योति' डाली।
[युक्ति-तर्क (विवर्त -परिणाम, देहाध्यास, रज्जु-सर्प आदि) द्वारा भ्रम को झुलसा देने वाली रौशनी] आज हमको बुद्धि के इस प्रखर सूर्य के साथ बुद्धदेव का अदभुत प्रेम और करुणा-युक्त हृदय भी चाहिये।
(दैट ब्राइट सन ऑफ़ इन्टलेक्चूऐलिटी जॉइंड विथ दी हार्ट ऑफ़ बुद्धा)। इसी सम्मिलन से हमें उच्चतम दर्शन की उपलब्धि होगी। 
[अर्थात हमे एक ऐसा सर्वोत्तम चरित्र प्राप्त होगा - जिसमें शंकराचार्य जैसी ' प्रज्ञा (इन्टलेक्चूऐलिटी) के सूर्य-प्रकाश के जैसी  उज्ज्वल और झुलसादेने वाली प्रखर बौद्धिकता  (हेड -विजडम या  विवेक- प्रयोग द्वारा सही विकल्प का चयन करने की क्षमता)  के साथ अनन्त प्रेम और करुणा से भरपूर बुद्ध के जैसा आश्चर्यजनक हृदय (हार्ट) , के साथ बाल-ब्रह्मचारी हनुमान जैसा बलवान शरीर (हैण्ड) ' भी प्राप्त होगा ]  
" अब उन्नीसवीं के इस उत्तरार्ध में भी ( या इक्कीसवीं सदी के दूसरे दशक में भी ?),  इस प्रकार की धारणा है कि हमारे बाप-दादों आया हुआ धर्म (हिन्दूइज्म,इस्लाम या क्रिश्चनिटी) ही एकमात्र सत्य है, और अन्य स्थानों से जिन सब दूसरे धर्मों का प्रचार हो रहा है- वे सब मिथ्या हैं। (रिलिजन कमिंग फ्रॉम एनी अदर सोर्स दैन वन्स ओन हेरिडिटरी रिलिजन मस्ट बी फाल्स) --इससे यही प्रमाणित होता है कि हमारे भीतर अभी भी दुर्बलतायें हैं। हमें ये दुर्बलताएँ दूर करनी होगी !
[ देयर इज  स्टिल वीकनेस लेफ्ट- श्रीरामकृष्ण देव ही आधुनिक युग में भगवान के अवतार हैं यह जान लेने के बाद भी यदि स्वयं को उनका भक्त कहने वाले व्यक्ति के हृदय में वंशानुगत धर्म के अतिरिक्त अन्य समस्त धर्मों को गलत समझने का विचार बना ही हुआ हो ? तो समझना होगा कि अभी तक हमारा चरित्र पूरी तरह से गठित नहीं हुआ है, अभी तक चित्त-शुद्धि नहीं हुई है !! हमारे भीतर अभी भी कुसंस्कार बचे हुए हैं । 'ऐंड सच आइडियाज मस्ट बी  गिवेन अप ' और इस कुसंस्कार को हमें अवश्य त्याग देना होगा।]  
" अतएव मैं यह कहने का साहस कर सकता हूँ कि 'अद्वैत धर्म ' (E=M) ही एकमात्र ऐसा धर्म है जो आधुनिक वैज्ञानिकों के सिद्धान्तों के साथ भौतिक और आध्यात्मिक दोनों दिशाओं में केवल मेल ही नहीं खाता, वरन उनसे भी आगे चला जाता है, और इसी कारण वह आधुनिक वैज्ञानिकों को इतना भाता है। वे देखते हैं कि द्वैतवादी धर्म उनके लिए पर्याप्त नहीं है, उनसे उनकी आवश्यकता की पूर्ति नहीं होती। (बुद्धि को संतुष्टि नहीं मिलती, इसीलिए अद्वैत  धर्म आइंस्टीन और निकोला टेस्ला जैसे वैज्ञानिकों को इतना अधिक आकर्षित करता है!) ..... मनुष्य को केवल श्रद्धा ही नहीं चाहिये, बल्कि उसमें बौद्धिक श्रद्धा (सर्वं खलु इदं ब्रह्म - की भावना) भी रहनी चाहिये । .... यूरोप का उद्धार एक बुद्धिपरक धर्म पर निर्भर है,  और वह है 'अद्वैत धर्म' , दी नॉन-डुअलिटी- अर्थात कोई पराया नहीं है, सभी अपने हैं का बोध, या एकात्मबोध; और निर्गुण-निराकार  ईश्वर को प्रतिपादित करने वाला यह वेदान्त ही, एक ऐसा धर्म है -जो किसी बौद्धिक जाति को संतुष्ट कर सकता है। जब कभी धर्म लुप्त होने लगता है और अधर्म का अभ्युत्थान होता है तभी इसका (अद्वैत श्रीरामकृष्ण का) आविर्भाव होता है। 
[दी साल्वेशन ऑफ़ यूरोप डिपेंड्स ऑन अ रेशनलिस्टिक रिलिजन, एंड अद्वैत — दी नॉन-डुअलिटी, दी  वननेस ,दी आईडिया ऑफ़ दी इम्पर्सनल गॉड.... 'इट कम्स ह्वेनेवर रिलिजन सीम्स टू डिसअपीयर ऐंड इर्रिलीजन सीम्स टु  प्रीवैल '] 
इसीलिये यूरोप और अमेरिका में यह अद्वैतवाद प्रविष्ट होकर दृढ़मूल होता जा रहा है। (आज इक्कीसवीं सदी में श्री रामकृष्ण -विवेकानन्द वेदान्त परम्परा में युवा नेतृत्व प्रशिक्षण का प्रचार-प्रसार होने से )...... विज्ञान और धर्म एक दूसरे का आलिंगन करेंगे। कविता और विज्ञान परस्पर मित्र बन जायेंगे । यही भविष्य का धर्म होगा। और यदि हम ऐसा (पाँच अभ्यासों के ह्यूमन इंजीनियरिंग द्वारा 3H निर्माण ) ठीक ठीक कर ले सकें, तो यह निश्चयपूर्वक कहा जा सकता है कि वह सर्वकालिक और सार्वलौकिक धर्म होगा ! यही पथ आधुनिक विज्ञान को ग्राह्य हो सकता है, क्योंकि वह लगभग वहाँ पहुँच गया है।

================================


' अद्वैतवाद की मूल बात' 
आइंस्टाइन के द्वारा पदार्थ और ऊर्जा की समतुल्यता को (१९०५ में ) प्रमाणित करने के बहुत पहले, स्वामी विवेकानन्द ने १८९६ में 'दी अब्सोल्यूट एंड मैनिफेस्टेशन’ (हिन्दी -ब्रह्म एवं जगत)  विषय पर लन्दन में भाषण देते हुए कहा था - " भारत में बुद्धदेव के आने पूर्व जो अत्यन्त प्रबल नास्तिकता थी, वह यूरोप और अमेरिका के विद्वानों में आजकल जैसी नास्तिकता है, वैसी नहीं, वरन वह तो इससे भी भयंकर थी। वह नास्तिकता यह शिक्षा देती थी कि -खाओ,पीओ और मौज उड़ाओ ; ईश्वर, आत्मा या स्वर्ग कुछ भी नहीं है; धर्म कुछ धूर्त, दुष्ट पुरोहितों की कपोल-कल्पना मात्र है -यावत जीवेत सुखम जीवेत ! और यह नास्तिकता उस समय इतनी बढ़ गयी थी कि उसका नाम ही 'लोकायत दर्शन' ("पॉपुलर फिलासफी") पड़ गया था। 
 आइ ऐम अ  मटिरीअलिस्ट इन अ सर्टेन सेंस" मैं भी एक प्रकार का भौतिकवादी हूँ; क्योंकि मेरा विश्वास है कि केवल एक ही वस्तु का अस्तित्व है। आधुनिक वैज्ञानिक भौतिकवादी भी यही कहते हैं, पर वे उसे 'जड़' (Matter) के नाम से पुकारते हैं, और मैं उसे 'ब्रह्म' कहता हूँ। ये भौतिकवादी कहते हैं, कि 'आउट ऑफ़ दिस मैटर ऑल होप, एंड रिलिजन, एंड एवरीथिंग हैव कम'-इस जड़ से ही समस्त आशा, धर्म तथा सभी कुछ प्रसूत हुआ है। और मैं कहता हूँ, 'ब्रह्म' से ही सब कुछ हुआ है। २/९३] "जब विज्ञान का अध्यापक कहता है कि ' आल थिंग्स आर दी  मैनिफेस्टेशन ऑफ़ वन फ़ोर्स' - सब कुछ उस एक शक्ति का ही विकास है - (E=M) तब क्या वह तुमको उपनिषदों में वर्णित उस ब्रह्म की याद नहीं दिलाता : 
अग्निर्यथैको भुवनं प्रविष्टो रूपं रूपं प्रतिरूपो बभूव।
                    एकस्तथा सर्वभूतान्तरात्मा रूपं रूपं प्रतिरूपो बहिश्च।। कठ /२/ २/९।।
जिस प्रकार एक ही अग्नि (तेज) जगत में प्रविष्ट होकर नाना रूपों में [उनके प्रतिरूप अथवा अनुरूप अथवा समरूप में] प्रकट होती है, उसी प्रकार सारे जीवों की अन्तरात्मा वह एक ब्रह्म ही नाना रूपों में प्रकाशित हो रहा है, फिर वह इस दृष्टिगोचर जगत के बाहर भी है ! एक ही अग्नि निराकाररूप से सारे ब्रह्मांड में व्याप्त है, उसमें कोई भेद नही है। परंतु जब वह साकार रूप से प्रज्वलित होता है, तब उन आधारभूत वस्तुओं का जैसा आकार होता है, वैसा ही आकार अग्नि का भी दृष्टिगोचर होता है। विज्ञान किस ओर जा रहा है, यह क्या तुम नहीं देख सकते ?
आज विज्ञान भी कह रहा है कि "ऑल  थिंग्स आर  बट दी मैनिफेस्टेशन ऑफ़ वन एनर्जी व्हिच इज़ दी सम  टोटल ऑफ़ एवरीथिंग व्हिच एगजिस्ट्स। " बाह्य विज्ञान के द्वारा भी हम मनस्तत्व में से होकर (मन-बुद्धि-चित्त-अहंकार को वशीभूत करने का प्रयास करते हुए) हम उसी एक अनन्त सार्वभौमिक सत्ता में पहुँच रहे हैं, जो सब वस्तुओं की अन्तरात्मा है, जो सबका सार और सभी वस्तुओं का सत्य है, जो नित्य मुक्त, नित्यानन्द और नित्य सत्ता है! यह जगत-प्रपंच उसी एक 'ब्रह्म या शक्ति ' का विकास है -जगत में जो कुछ भी है, वह उस सब की समष्टि है। 
[" अद्वैत वेदान्त के इस बात की धारणा करना अत्यन्त कठिन है कि जो ब्रह्म अनन्त-असीम (Infinite) है वह  सान्त-ससीम (finite) किस प्रकार हुआ ? [ दूसरे शब्दों में पदार्थ (Matter) यूरेनियम -235 की एक छोटे से कण में  परमाणु-बम जितनी अनंत ऊर्जा (Energy) कैसे समा गयी ?] 


उपरोक्त चित्र में (a) ब्रह्म (दी ऐब्सलूट) है, और (b) है जगत (दी यूनिवर्स)। ब्रह्म ही जगत हो गया है। यहाँ पर जगत शब्द से केवल दृष्टि-गोचर जड़-जगत (शरीर-हैण्ड) ही नहीं, किन्तु सूक्ष्म (मन-माइंड) तथा आध्यात्मिक जगत (हृदय-हार्ट) स्वर्गनरक [ हृदय के सिंहासन पर 'सिंह' (ठाकुर देव) विराजमान हैं, या 'कामुकता और कमाई' रूपी लोमड़ी बैठी है ?] वास्तव में जो कुछ भी है, सबको इसके अंतर्गत लेना होगा।यह ब्रह्म (a) देश-काल-निमित्त (time, space, and causation)(c) में होकर आने से जगत (b) बन गया है।  "दिस इज  दी सेन्ट्रल आईडिया ऑफ़ अद्वैता" - अद्वैतवाद की मूल बात यही है ! [ क्या ? यह जगत ब्रह्म का विवर्त है परिणाम नहीं है !] 
हम देश-काल-निमित्त रूपी चश्मे से ब्रह्म को देख रहे हैं, और इस प्रकार नीचे की ओर से देखने पर 'ब्रह्म' 
(जो उर्ध्व मूलं अधो शाखं है) हमें जगत के रूप में दीखता है। इससे यह स्पष्ट है कि जहाँ ब्रह्म (a) है, वहाँ देश-काल-निमित्त (c) नहीं है। काल वहाँ नहीं रह सकता, क्योंकि वहाँ न मन (अहं) है, न विचार (भ्रम), -"दी आईडिया ऑफ़ स्पेस कैन नॉट बी  देयर, सीइंग दैट देयर इज  नो एक्सटर्नल चेंज." देश भी वहाँ नहीं रह सकता, क्योंकि वहाँ कोई बाह्य परिणाम (शरीर?) नहीं है। " व्हाट यू कॉल मोशन एंड कॉज़ेशन कैन नॉट एग्जिस्ट व्हेयर देयर इज ओनली वन" --जहाँ सत्ता केवल एक है, वहाँ गति (जन्म-मृत्यु) अथवा 'कॉज़ेशन' कार्य-कारण वाद भी नहीं रह सकता।
इस बात को - यानि 'कॉज़ेशन ' को - समझना और इसकी अच्छी तरह धारणा कर लेना हमारे लिये अत्यावश्यक है। क्योंकि, जिसको हम कार्य-कारणवाद या ' कॉज़ेशन' कहते हैं, वह तो;  यदि हम इन शब्दों का प्रयोग कर सकें, " दी डिजनरेशन ऑफ़ दी ऐब्सलूट इन्टु दी फेनोमेनल" - ब्रह्म के प्रपंचरूप में अधःपतित होने ('कामुकता और कमाई ' के कण्डूरोग द्वारा हिप्नोटाइज्ड हो जाने) के बाद ही होता है, उससे पहले नहीं। तथा हमारा संकल्प (कण्डूरोग से छूटने का संकल्प या चरित्रवान मनुष्य बन जाने का संकल्प -Our Will) या वासना (our desire) आदि जो कुछ है, वे सब उसके बाद ही आरम्भ होते हैं। " २/ ८५

(साभार ramakrishnavivekananda.info
----------------------------------------------------
लीडरशिप क्लास 
महामण्डल पुस्तिका -" २१ वीं सदी के भण्डार में क्या है ?" तथा १९८७ में ' A NEW YOUTH MOVEMENT' दोनों पुस्तिकायें 'माइंड ब्लोइंग' हैं -अर्थात नाम-रूप के मिथ्या अहंकार को समाप्त कर देने वाली हैं। 
महामण्डल पुस्तिका ' A NEW YOUTH MOVEMENT' के दूसरे अध्याय -' उन्नततर मनुष्यों का उन्नततर समाज' (Tend individuals,Tend Society !) में "इन स्टोर फॉर दी ट्वेंटी-फर्स्ट सेंचुरी" का उल्लेख करते हुए कहा गया है कि "व्यावहारिक वेदान्त- 'BE AND MAKE ' ही इक्कीसवीं सदी में एक सार्व-भौमिक धर्म का रूप धारण कर लेगा ! 
इसीलिये रामकृष्ण- विवेकानन्द अचिन्त्य-भेदाभेद वेदान्त या व्यावहारिक वेदान्त  'BE AND MAKE ' शिक्षक-प्रशिक्षण परम्परा में आधारित चरित्र-निर्माण आंदोलन में भाग लेकर उसके निहितार्थ को, 
(या उपनिषदों के चार महावाक्यों के मर्म तथा मधुसूदन सरस्वती के अचिन्त्य-भेदाभेद की 'अद्वैत-सिद्धि' को)  समझे बिना; या 'नॉलेज और विजडम' में संतुलन बनाये रखने की तकनीक को जाने बिना, जो लोग केवल एक-दो पुस्तक पढ़ कर, " श्रीरामकृष्ण-विवेकानन्द वेदान्त परम्परा में मनुष्य निर्माण की पद्धति" को समझना चाहेंगे, उन्हें सावधान करते हुए स्वामी विवेकानन्द ने कहा था-  उनमें से ८० % लोग ठग-वैद्य, १५ % विक्षिप्त (insane) और ५ % को ही सत्य की थोड़ी सी झलक प्राप्त होगी।  
हमारे देश में  हजारों साल पहले ही हमारे ऋषि-मुनि पूर्वजों ने इस ब्रह्मविद्या (पराविद्या या विजडम)
को खोज निकालने की चेष्टा की थी, और उसे अर्जित करने की एक वैज्ञानिक पद्धति (पातंजल -योगसूत्र) का आविष्कार भी कर लिया था। वे बाह्यजगत के विज्ञान - अपराविद्या (क्षात्रवीर्यनॉलेज या अविद्या) और आंतरिक जगत के विज्ञान - पराविद्या (ब्रह्मतेजविजडम =प्रज्ञता) के बीच समन्वय स्थापित करना चाहते थे, और हमारे देश में दोनों के बीच एक आदर्श-समन्वय स्थापित भी था। किन्तु कुछ अपरिहार्य कारणों से हजार वर्षों की गुलामी के दौरान हमारे 'नेता' या (लोक-शिक्षक) लोग इन दोनों विज्ञानों- " विद्या और अविद्या " के बीच संतुलन और समन्वय बनाये रखने की ट्रिक (या चतुराई ?) को भूल गए। 
किन्तु जिनके पास तह में छुपी सच्चाई को देखने योग्य ऑंखें हैं, (रसिया में कम्युनिज्म का पतन, ब्रिटेन के यूरो जोन से निकलने के साथ अमेरिका में भौतिकवाद के अतिशीघ्र संभावित पतन एवं अन्तर्राष्ट्रीय योगदिवस, कश्मीर के उरी कैम्प पर हमले के बाद पाकिस्तान को आंतकी देश घोषित किया जाना, बलोच नेता ब्रह्मदाग बुग्ती,रोहंगिया मुसलमान आदि का भारत में शरण लेना -आदि घटनाओं के साथ विश्व रंगमंच पर भारत का उत्थान आदि) वे स्पष्ट रूप से देख सकते हैं कि इन दोनों विज्ञानों के बीच का यह समन्वय अतिनिकट भविष्य में सम्पूर्ण विश्व में अपनी पहचान बनाने जा रहा है। महामण्डल के द्वारा हाल में प्रकाशित पुस्तिका " इन स्टोर फॉर दी ट्वेन्टी-फर्स्ट सेंचुरी " (२१ वीं सदी के भण्डार में क्या है ?)  इस सम्भावना की एक झलक देख भी सकते हैं।" 
१. कि इक्कीसवीं सदी के दूसरे दसक में : महामण्डल के द्वारा 'रामकृष्ण-विवेकानन्द वेदान्त परम्परा 
('BE AND MAKE' परम्परा) में आयोजित किये जाने वाले-"गोल्डन जुबली कैम्प" अर्थात '५० वें वार्षिक युवा प्रशिक्षण शिविर' के बाद: भारत के ८० करोड़ युवा में से कम से कम कुछ हजार युवा तो यह अवश्य 
समझने लगेंगे कि, आधुनिक विश्व को वेदों-उपनिषदों के चार महावाक्यों द्वारा निर्देशित - प्रज्ञता (विजडम) की आवश्यकता है, यदि आप चाहें तो इसीको दर्शन या धर्म भी कह सकते हैं !
विश्व-मानवता के कल्याण के लिये करने के विकल्प का चयन करने में- ज्ञान (नॉलेज -अपरा विद्या) का सही उपयोग करने के लिये यह प्रज्ञता (विजडम- परा विद्या श्रेय-प्रेय विवेक क्षमता) ही मनुष्य की सहायता कर सकती है। जिस 'मानवीय अज्ञानता' (अविद्या) के कारण ही मनुष्य के ' दुःख में वृद्धि' होती है, उससे बचने का उपाय है, विवेक-प्रयोग। 
प्रज्ञता (विजडम-सही विकल्प चयन क्षमता) ही वह फिलॉसफी या धर्म है जो वैज्ञानिक-तर्क की कसौटी पर खरा उतर सकती है। "विजडम कुड नॉट ओनली सूद दी सोल बट वुड ऑल्सो सैटिस्फाई दी इंटेलेक्ट" यह विजडम (सत-असत विवेक क्षमता) सही विकल्प का चयन करने का सामर्थ्य केवल आत्मा (हर्ट) के लिये ही शांतिदायक नहीं होगा, बल्कि यह बुद्धि (हेड) को भी संतुष्ट करेगा। 
इसीलिए अगले दो दशकों तक (२०३७ तक) - महामण्डल के जो नेता " परा-विद्या और अपरा-विद्या" में समान रूप से सन्तुलन बनाये रखने की तकनीक सीख लेंगे। वे प्रचलित शिक्षा (अपरा-विद्या) के द्वारा आर्थिक दृष्टि से आत्मनिर्भर हो जायेंगे, और उसके साथ-साथ  'पाठचक्र और वार्षिक युवा-प्रशिक्षण शिविर 'के माध्यम से "कामुकता और धनदौलत" (लस्ट ऐंड ल्यूकर) से डी-हिप्नोटाइज्ड होने की पद्धति (पाँच दैनन्दिन अभ्यासों) को जीवन में धारण कर, अपने समय और साधन का विवेक -प्रयोग द्वारा सही विकल्प चयन करने में सक्षम एक ब्रह्मवेत्ता मनुष्य के बन जायेंगे। 
क्योंकि महामण्डल का जो नेता अपने हृदय में  आधुनिक युग के मानवजाति के सच्चे मार्गदर्शक नेता भगवान श्रीरामकृष्णदेव को स्थापित कर लेगा, उनके आते ही उसके हृदय में जमा हजारों वर्षों से जमा हुआ अँधेरा या 'लस्ट ऐंड ल्यूकर' (काम-वासना और धन-दौलत) रूपी युगल-मूर्ति स्वतः भाग   जाएगी। 
वे कभी यह विश्वास नहीं करेंगे कि-  " अब भगवान का निधन हो चुका है।" (विश्वभर में इतनी अधिक आतंकवादी घटनाओं के होने के बावजूद)  क्योंकि हमलोग जानते हैं कि स्वामी विवेकानन्द के गुरु श्रीरामकृष्ण देव ने स्वयं अपने मुख से कहा था कि, ' क्या नरेन, अभीतक अविश्वास ! जो राम हुए थे जो कृष्ण हुए थे वही इस बार रामकृष्ण हुए हैं, किन्तु तेरे वेदान्त की दृष्टि से नहीं -बिल्कुल साक्षात् ! " अर्थात महामण्डल के नेता इस बात पर हृदय से (अपने हृदय में उनकी कृपा का अनुभव करके) विश्वास करेंगे कि भगवान श्री रामकृष्ण परमहंस देव ही आधुनिक युग में " अद्वैत धर्म" के अवतार हैं, वे स्वयं अद्वैतवाद हैं - क्योंकि जो श्रीराम और श्रीकृष्ण थे वही ब्रह्म वे स्वयं थे! 
 एक सम्मान-पूर्ण ढंग से  जीवन व्यतीत करने के लिए जितनी  भौतिक सुख-सुविधा की जरुरत होती है, उतना सब कुछ प्राप्त कर लेने के बाद ; उससे अधिक भौतिक वस्तुओं को प्राप्त करने की लालच को ही भौतिकवाद से हिप्नोटाइज्ड पशु-मानव बन जाना कहते हैं। अतः हमें भी नचिकेता के जैसा इस लालच को त्याग देना चाहिये और महामण्डल द्वारा निर्धारित पाँच दैनंदिन अभ्यास के द्वारा यथार्थ मनुष्य बन जाने के लिए कठोर परिश्रम करना चाहिये। 
महामण्डल नेता के मन में यह दृढ़ विश्वास रहना चाहिये कि " जिस प्रकार पहले दो बार (बुद्धदेव और शंकराचार्य के आविर्भूत होने के बाद) अद्वैतवाद ने भौतिकवाद से भारत की रक्षा की थी"-  ठीक उसी प्रकार महामण्डल के आविर्भूत होने के बाद, वही अद्वैत-धर्म "Be and Make" पुनः एक बार भौतिकवाद से केवल भारत की रक्षा ही नहीं करेगा बल्कि विश्व में शांति स्थापित करने वाले विश्वगुरु के रूप में भारतवर्ष को प्रतिष्ठित भी करा देगा। 
इसीलिये अब हमें आध्यात्मिकता (चार महावाक्यों, परा-विद्या या विजडम) के द्वारा सम्पूर्ण भारत को आप्लावित कर देने के लिये, वे भारत के प्रत्येक राज्यों में बारी-बारी से " अन्तर्राज्य स्तरीय युवा प्रशिक्षण शिविर" " इंटर-स्टेट 'बी ऐंड मेक' यूथ ट्रेनिंग कैम्प " का आयोजन करके इस 'मनुष्य (ब्रह्मवेत्ता मनुष्य)
बनो और बनाओ' आंदोलन (एक नया युवा आंदोलन) को एक जन-आंदोलन में परिवर्तित कर देने के लिये अथक परिश्रम करते रहना चाहिए। 
२. बोस्टन विश्वविद्यालय में बायो केमिस्ट्री के प्रोफेसर तथा साइंस फिक्शन के प्रसिद्द लेखक इसहाक असिमोव का होमोसुपीरियर:
 उन्नततर मनुष्यों का निर्माण करने से ही  उन्नततर समाज या महान भारतवर्ष का निर्माण किया जा सकता है । किन्तु, जब हमलोग वैज्ञानिक दृष्टि इतने उन्नत हो जायेंगे कि हमारे सारे कार्य - देखने, सुनने,विचार करने, विवेक-प्रयोग करने - आदि ,कार्य भी रोबोट्स ही करने लगेंगे, तब मनुष्य क्या करेंगे ? 
जब मनुष्य बेरोजगार हो जायेगा, तो आर्थिक रूप से असुरक्षित महसूस करेगा, और उसकी आत्सम्मान की भावना भी चली जाएगी। इस स्थिति से बचने का उपाय बतलाते हुए बोस्टन विश्वविद्यालय में बायो केमिस्ट्री के प्रोफेसर तथा साइंस फिक्शन के प्रसिद्द लेखक इसहाक असिमोव अपनी पुस्तक 'मॉडर्न मैच्यूरिटी' में कहते हैं कि तब, उस बेरोजगारी के कारण खाली बचे समय में हमें  जेनेटिक इंजीनियरिंग का प्रयोग करके 'होमो सेपियन्स' अर्थात मानव प्रजाति को 'होमो  सूपीरीअर्स ' या 'उन्नततर मानव प्रजाति' में रूपांतरित करने का प्रयास करना चाहिये।
तभी रोबोट्स जब हमारे सभी कार्य कर रहे होंगे तो, मनुष्य के पास भी एंगेज रहने के लिए कुछ काम तो बचा रहेगा !  इस प्रकार के विचार को ही 'वैज्ञानिक अन्धविश्वास' या ख्याली पुलाव पकाना कहते हैं, जो वास्तव में मनुष्य क्या है - इस बात की जानकारी नहीं रहने के कारण उत्पन्न होती है। मनुष्य के यथार्थ स्वरूप के विषय में हमारी अज्ञानता, अधपके केक को ही असली केक समझने जैसा है; जो हमारे मन में किसी मनुष्य को अपने से तुच्छ समझने, उसके जाति, धर्म और नस्ल के आधार पर डिस्टेस्ट,वैमनस्य या घृणा का भाव उत्पन्न करता है।जब 'मनुष्य वास्तव में क्या है '- यह हम नहीं जान पाते हैं, तभी हमलोग जेनेटिक इंजीनियरिंग की सहायता से 'होमो सूपीरीअर' को निर्मित करने बात सोचने लगते हैं।
हमलोग जेनेटिक-इंजियनिरिंग या स्पेस साइंस में चाहे कितना भी तरक्की क्यों न कर लें, किन्तु  " मनुष्य कभी किसी ऐसी वस्तु का निर्माण नहीं कर सकता जो स्वयं मनुष्य की तुलना में अधिक आश्चर्यजनक हो!"  क्या कभी कोई ऐसा रोबोट निर्मित किया जा सकता है जिसमें प्रेम और ममता भी हो ? क्या कोई ऐसा इलेक्ट्रॉनिक गैजिट (मशीन) निर्मित किया जा सकता है जिसके पास दूसरों के सुख-दुःख को अनुभव करने वाला एक सहानुभूति-सम्पन्न हृदय भी हो ? क्या कभी कोई ऐसा रोबोट बनाया जा सकता है, जो सौन्दर्य और कला की प्रशंसा करने या मूल्यांकन करने में भी सक्षम हो ? नहीं, कभी नहीं ! 
फ्रेडरिक नीत्शे का सुपरमैन: (नीत्शे एक जर्मन दार्शनिक था, जो संसार के समक्ष ढोंगी आस्तिक होकर रहने की बजाय, स्वयं को एक नास्तिक कहलाना अधिक उचित समझता था।) इसीलिए नीत्शे का सुपरमैन या अतिमानव  'दी ब्लॉन्ड बीस्ट' (सुनहरे बालों वाला पशु-मानव)  आसुरी लक्षणोँ से युक्त है। उसमें दया, प्रेम, करुणा, सहानुभूति जैसे कोमल भावनाओं का सर्वथा अभाव है। वह अत्यन्त पाषाणी हृदय, क्रूर निर्दयी तथा प्रचण्ड शक्तिशाली पुरुष की कल्पना है। क्योंकि नीत्शे या पाश्चात्य दार्शनिकों को यह पता ही नहीं है कि मनुष्य कोई 'फिनिश्ड प्रोडक्ट' (पूर्ण निर्मित उत्पाद) नहीं है।
यह विश्व मनुष्यों के लिये एक वर्कशॉप (कारखाने) के जैसा है, जिसमें तप कर मनुष्य 'पूर्णता' (फिनिश) को प्राप्त होता है। जब कोई व्यक्ति जगत में रहते हुए "3H निर्माण" की प्रक्रिया से गुजरता है, तब हमें 'यथार्थ मनुष्य ' रूपी वह फिनिश्ड प्रोडक्ट प्राप्त होता है। क्योंकि तब वह अपनी अनंत संभावनाओं को अभिव्यक्त करने में समर्थ होता है,[अर्थात वह ब्रह्म (पूर्ण)  को जानकर साधारण मनुष्य से 'ब्रह्मविद मनुष्य' या यथार्थ मनुष्य बन जाता है!]
३.ब्रह्मविद मनुष्य बनें या नहीं ? ' दिस चूजिंग कैन नॉट बी लेफ्ट टू रोबोट्स' : किन्तु,रोबोट्स के डिजाइन में काफी सुधार होने के बावजूद, यदि कम्प्यूटर की सहायता से मानव-मन को शांत और संयत कर पाना कभी सम्भव हो भी गया तो भी तब भी  (श्रेय-प्रेय) चयन के कार्य को किसी रोबोट के ऊपर नहीं छोड़ा जा सकता।  
और जब तक मनुष्य स्वयं को पूर्ण रूप से विकसित नहीं कर लेता, तब तक वह सही विकल्प का चयन भी नहीं कर सकता।  तथा  मनुष्य के समुचित विकास  (मान- हूश 'मनुष्य' जिसे अपनी मानवोचित मर्यादा का होश बना रहता है) का कार्य केवल आध्यात्मिकता के द्वारा ही सम्भव हो सकता है।  क्योंकि " मैन हिप्नोटाइजेज  हिमसेल्फ टू बिलीव दैट ही इज अ क्रियेचर ऑफ हिस्ट्री एंड एनवायरनमेंट": 'कामुकता और धन' के मोह में पड़ कर, मनुष्य अपनी आंतरिक शक्ति (आत्मशक्ति) को भूल जाता है, और यह विश्वास करने के लिये स्वयं को ही सम्मोहित करने लगता है,-(मैं सिंह नहीं हूँ भेड़ हूँ!) अर्थात स्वयं से रात-दिन कहने लगता है कि, " मैं तो इतिहास (history= पूर्व जन्म की प्रवृत्तियों) और परिवेश (environment
-जिस M/F शरीर में जन्म हुआ) की जंजीरों से बन्धा एक पशु हूँ !" 
ऐसा सोचने वाले मनुष्य इस जगत को पुनः नये सीरे से मनुष्यों के रहने योग्य (ब्रह्म-मय जगत) बनाने के बजाय, स्वयं जगत के द्वारा ही धराशायी, विकृत और बौना बना दिया जाता है। तथा 'पदार्थ और ऊर्जा' को अपना एक अच्छा सेवक बनाने की चेष्टा करते करते (उनकी समतुल्यता E=M अविवादित है) वह स्वयं ही जड़ पदार्थों का एक बुरा-गुलाम बन जाता है। 

 .... यूरोप का उद्धार (या यूरोप के भौतिकवाद से ग्रस्त इंडिया का उद्धार ) एक बुद्धिपरक धर्म पर निर्भर है,  और वह है 'अद्वैत धर्म' , दी नॉन-डुअलिटी- अर्थात कोई पराया नहीं है, सभी अपने हैं का बोध, या एकात्मबोध। और निर्गुण-निराकार  ईश्वर को प्रतिपादित करने वाला यह वेदान्त ही, एक ऐसा धर्म है -जो किसी बौद्धिक जाति को संतुष्ट कर सकता है। 
जब कभी धर्म लुप्त होने लगता है और अधर्म का अभ्युत्थान होता है तभी इसका (व्यावहारिक अद्वैत-अचिन्त्य भेदाभेद वेदान्त = बी ऐंड मेक का) आविर्भाव होता है। (इसीलिए व्यावहारिक अद्वैतवाद आइंस्टीन और निकोला टेस्ला जैसे वैज्ञानिकों को इतना अधिक आकर्षित करता है!) क्योंकि  मनुष्य को केवल श्रद्धा ही नहीं चाहिये, बल्कि उसमें बौद्धिक श्रद्धा (सर्वं खलु इदं ब्रह्म - की भावना) भी रहनी चाहिये । 
जो महामण्डल नेता विवेकानन्द द्वारा आविष्कृत - 'बी ऐंड मेक ' रूपी अचिन्त्य-भेदाभेद वेदान्त के महावाक्य पर बौद्धिक-श्रद्धा रखते हुए इसके प्रचार-प्रसार आन्दोलन में कूद पड़ता है, वह ' Lust and Lucre '  के सम्मोहन से उत्पन्न ='भेंड़त्व' की मानसिकता को समाप्त करने या स्वयं को विसम्मोहित ( डी-हिप्नोटाइज) करने के लिए सर्वप्रथम ऑटोसजेशन, (स्वाध्याय) "चमत्कार जो आपकी आज्ञा का पालन करेगा" प्रपत्र का अभ्यास करके चरित्रवान मनुष्य बन जाने का संकल्प ग्रहण करता है; और  स्वयं को रात-दिन सुनाता रहता है -  अब लौं नसानी, अब न नसैहों। रामकृपा 'भव-निसा' सिरानी जागे फिर न 'डसैहौं' ॥पायो नाम चारु चिंतामनि उर करतें न खसैहौं। 
भावार्थ - जब तक महामंडल के ' बी ऐंड मेक' आंदोलन से मैं नहीं जुड़ा था, तब तक 'कामुकता और धनदौलत' के चका-चौंध से हिप्नोटाइज्ड होकर ' मैं सिंह शावक' (आत्मा)  होकर भी स्वयं को एक 'भेंड़' (शरीर) समझ रहा था, और 3H निर्माण पद्धति से अनजान होने के कारण, महामण्डल द्वारा निर्देशित ५ अभ्यासों का पालन न करके, अब तक की आयु को व्यर्थ में- में-में करता हुआ नष्ट कर रहा था। किन्तु श्री ठाकुर देव की कृपा, और विवेक-दर्शन का अभ्यास करने से मेरी 'भव-निसा' सम्मोहित-दसा (हृदय का अंधकार) समाप्त हो गया है।
 जागे=  'उत्तिष्ठत -जाग्रत' की वाणी सुनकर मैं अपने यथार्थ स्वरूप में निरन्तर जाग्रत रहता हूँ।  फीर न डसैहौं = डासना = फिर माया के लिए बिछौना या आसन बिछाना= 'कामुकता और धनदौलत' के प्रति आसक्ति के लिए अपने हृदय में बिछौना नहीं बिछाऊंगा- अर्थात ठाकुर के आसन पर अविद्या-माया को (मिथ्या नाम-रूप के अहंकार को) बैठने नहीं दूँगा !
  'पायो नाम चारु चिंतामनि' = चार महावाक्यों के सार व्यावहारिक वेदान्त  'बी ऐंड मेक' का नाम का श्रवण, जो  गुरु विवेकानन्द के मुख से प्राप्त हुआ है, उसे 'मनन और निदिध्यासन' रूपी हाथ से कभी गिरने नहीं दूंगा। अब तक का जीवन बर्बाद किया। आगे न करूंगा। और क्रमशः आत्मज्ञान (प्रज्ञता या विजडम)  प्राप्त करने के बाद 'ब्रह्मवेत्ता' मनुष्य,  देव-मानव या होमो-सुपीरियर बन जाने का यही मार्ग है।
 जैसा कि उपनिषदों में वर्णित है - द्वा सुपर्णा = दो पक्षी (सिद्धार्थ तथा बुद्ध / नरेन्द्र तथा  विवेकानन्द)
सयुजा = सदा साथ रहने वाले, (तथा) सखाया = परस्पर सख्यभाव रखने वाले, समानम् = एक ही, वृक्षम = वृक्ष (शरीर) का आश्रय लेकर रहते है, तयोः = उन दोंनो में से, अन्य = एक (सिद्धार्थ गौतम या गृहस्थ) तो, पिप्पलम् =उस वृक्ष के फलेां (कर्म फलों) को, स्वादु=स्वाद ले-लेकर, अत्ति = खाता है, अन्यः=किन्तु दूसरा (बुद्ध, वानप्रस्थी या महामण्डल नेता ), अनश्नन् = उनका उपभोग न करता हुआ, अभिचाकशीति  = केवल देखता रहता है। 
सिद्धार्थ गौतम से गौतम बुद्ध बन जाने या नरेन्द्रनाथ से विवेकानन्द के जैसा मानवजाति का सच्चा मार्गदर्शक नेता बन जाने (या  ऊपर वाला पक्षी - जो खट्टे-मीठे फलों को नहीं खाता केवल -अभिचाकशीति ! ) का यही मार्ग है। 
जो युवा महामण्डल द्वारा निर्देशित मनुष्य निर्माण पद्धति के ५ अभ्यासों का निष्ठापूर्वक पालन करेगा, वह आजीवन एक हिप्नोटाइज्ड पशु-मानव ही नहीं बना रहेगा। " कामुकता और धनदौलत " के प्रति आसक्ति को त्याग देगा और कभी अपने को (history= पूर्व जन्म की प्रवृत्तियों और environment-जिस M/F शरीर में जन्म हुआ)  के फंदे में बन्धा हुआ पशु नहीं समझेगा और भेंड़-मानव से 'मनुष्य' में और  मनुष्य से 'देव -मानव ' या होमो-सुपीरियर 'सिंह' -ब्रह्मवेत्ता मनुष्य बन जायेगा। 
अर्जुन भी जब तक भगवान श्रीकृष्ण के मुख से गीता (उपनिषदों के महावाक्यों के मर्म को ) को नहीं सुना था तब तक वह गाण्डीवधारी अर्जुन होकर भी स्वयं को और अपने रिश्तेदारों को केवल नश्वर शरीर समझकर भेंड़ की तरह में में करके भय से " धाराशायी-विकृत और बौना" हुआ था। तथा 'पदार्थ और ऊर्जा' को अपना एक अच्छा सेवक बनाने की चेष्टा करते करते (उनकी समतुल्यता E=M अविवादित है) वह स्वयं ही जड़ पदार्थों का एक बुरा-गुलाम बन गया था। 
किन्तु, गीता में श्रीकृष्ण के मुख से अद्वैत-धर्म के महावाक्यों का  " श्रवण-मनन और निदिध्यासन" करने के बाद, उसके मर्म को अपनेअनुभव से समझ लेने के बाद १८ वें अध्याय के ७३ वें श्लोक में अर्जुन के मुख से निकला था - 

नष्टो मोहः स्मृतिर्लब्धा त्वत्प्रसादान्मयाच्युत।
                   स्थितोऽस्मि गतसन्देहः करिष्ये वचनं तव।।18.73।।       
[ नष्टो मोहः स्मृतिः लब्धा त्वत्प्रसादात् मया अच्युत/  स्थितः अस्मि  गतसन्देहः करिष्ये  वचनम् तव]
अर्जुन स्वीकार करता है कि उसका मोह (सम्मोहित अवस्था भेंड़त्व की अवस्था) नष्ट हो गया है। मुझे स्मृति प्राप्त हो गयी है - मैं तो वास्तव में सिंहशावक ही था ! इस वाक्य से यह दर्शाया गया है कि उसके मोह की निवृत्ति भगवान् के उपदेश (नॉलेज)  का केवल श्रवण कर लेने भर से नहीं हुई थी;  वरन् ' मनन और निदिध्यासन ' द्वारा पूर्ण विचार करके, आत्मसाक्षात्कार कर लेने के बाद जो प्रज्ञता प्राप्त होती है उस विजडम से हुई है। 
उसके अन्दर का वीरत्व जागृत हो गया है और उसकी सम्मोहावस्था समाप्त हो गयी है। जब हम गीता- दर्शन के वास्तविक अभिप्राय को पूर्णतया समझ लेते हैं,  केवल तभी हम में प्रज्ञता या विजडम जागृति होती है;  और हम अपने वास्तविक स्वरूप को पहचान पाते हैं।
पूर्णत्व (ब्रह्मत्व, सिंहत्व या बुद्धत्व ) तो हमारा आत्मस्वरूप ही है। उसे किसी देशान्तर या कालान्तर में किसी बाह्य शक्ति के हस्तक्षेप की सहायता से प्राप्त नहीं करना है। केवल अज्ञान के कारण हम स्वयं को जीव (नीचे वाला पक्षी ) समझ कर दुख और कष्ट भोग रहे हैं। जीव दशा के कष्टों को भोगते समय भी वस्तुत हम पूर्ण आत्म स्वरूप ही होते हैं। अत आवश्यकता केवल सम्यक् आत्मज्ञान की ही है, 'विवेकानन्द' या विवेक-प्रयोग करके सही विकल्प का चयन करने की क्षमता तो नित्योपलब्ध ही है। मनुष्य का देवत्व (सिंहत्व)  जागृत होने से उसके अन्दर का पशुत्व (भेंड़त्व)  समाप्त हो जाता है। अपूर्ण ज्ञान की स्थिति में ही मन में शोक, मोह, भय, निराशा, दुर्बलता आदि अनेक सन्देह उत्पन्न होते हैं। अब,  अर्जुन को पूर्ण ज्ञान होने के कारण वह सन्देह रहित (गतसन्देह) भी हो गया है।
आत्मज्ञान की दृष्टि से,  आत्ममुल्यांकन तालिका को भरने के बाद जब चरित्र के चौबीसो गुण में ८० % अंक प्राप्त हो जाते हैं और प्रज्ञता स्थायी संपत्ति बन जाती है, तब इस जगत रूपी कारखाने या युद्धभूमि का पुनर्निरीक्षण एवं पुनर्मूल्यांकन करने पर उसे, अब, अपने कर्तव्य (ब्रह्मवेत्ता मनुष्य बनना और बनाना या 'बी ऐंड मेक ')  को निश्चित करने में कोई कठिनाई नहीं होती है।
वह अपने (विशुद्ध बुद्धि के ) निर्णय की स्पष्ट घोषणा करता है-  'मैं आपके (महामण्डल के) आदेश (पाँच अभ्यास ) का पालन करूंगा।'  अत समस्त महामण्डल नेताओं  को अपने अहंकार का त्याग करके अपनी विशुद्ध बुद्धि के निर्णयों का सदैव पालन करना चाहिए। यही आध्यात्मिक जीवन का प्रारम्भ है, और समापान भी। यहाँ महामण्डल द्वारा प्रकाशित समस्त पुस्तिकाओं का अध्यन (श्रवण -मनन -निदिध्यासन ) की परिसमाप्ति होती है।
 [श्रीरामकृष्ण-विवेकानन्द वेदान्त परम्परा में युवा नेतृत्व प्रशिक्षण द्वारा प्रशिक्षित महामण्डल का नेता  गीता समाप्ति का वह अर्जुन है जो अपनी अपरा-विद्या ( नॉलेज =शरशास्त्र प्रविद्या, सूक्ष्म बुद्धि) और परा-विद्या (श्रेष्ठ ज्ञान, विजडम या प्रज्ञता) के साथ अत्यन्त नम्रता से भगवान् श्रीकृष्ण के सामने सम्पूर्ण आत्मसमर्पण कर उन्हीं की इच्छा को अपनी इच्छा मानता है तथा ईश्वर का निमित्त मात्र होने को तैयार है। ’सर्वस्व समर्पण' करके ही ईश्वर के हाथों यंत्र बनना सम्भव है। 
और जो श्री ठाकुर देव का यंत्र बन सका उसी का जीवन सार्थक है। ऐसे जीवन में ही विकास की अनन्त संभावनाएँ सन्निहित होती हैं। यही जीवन देवत्व का पर्याय होता है। जो अपनी दिव्यता से अपने वातावरण को भी स्वर्गतुल्य बना देता है। अतः अतिमानव के इस यथार्थ को साकार करने लिए हमें अपने चरित्र, चिन्तन एवं व्यवहार को सुधारने एवं संवारने की प्रक्रिया प्रारम्भ कर देनी चाहिए। 
और इस प्रकार इक्कीसवीं सदी में महामण्डल का जो सामूहिक 'युवा- नेतृत्व' उभर कर सामने आएगा, उसके सभी नेताओं के मुख से वही वाक्य निकलेगा -"  नष्टो मोहः स्मृतिः लब्धा त्वत्प्रसादात् मया अच्युत/  स्थितः अस्मि  गतसन्देहः करिष्ये  वचनम् तव"
" अतएव मैं यह कहने का साहस कर सकता हूँ कि 'अद्वैत धर्म ' (बी ऐंड मेक ) ही एकमात्र ऐसा धर्म है जो आधुनिक वैज्ञानिकों के सिद्धान्तों के साथ भौतिक और आध्यात्मिक दोनों दिशाओं में केवल मेल ही नहीं खाता, वरन उनसे भी आगे चला जाता है। इसीलिए यह व्यावहारिक अद्वैतवाद- 'बी ऐंड मेक'; भारत के प्रत्येक राज्यों में  प्रविष्ट होकर दृढ़मूल होता जा रहा है। तथा इक्कीसवीं सदी में 'श्री रामकृष्ण -विवेकानन्द अचिन्त्य-भेदाभेद वेदान्त परम्परा में युवा नेतृत्व प्रशिक्षण' का प्रचार-प्रसार होने से,  विज्ञान और धर्म एक दूसरे का आलिंगन करेंगे। कविता और विज्ञान परस्पर मित्र बन जायेंगे । यही 'बी ऐंड मेक ' भविष्य का धर्म होगा।और यदि हम ऐसा (पाँच अभ्यासों के ह्यूमन इंजीनियरिंग द्वारा 3H निर्माण ) ठीक ठीक कर ले सकें, तो यह निश्चयपूर्वक कहा जा सकता है कि वह सर्वकालिक और सार्वलौकिक धर्म होगा ! यही पथ आधुनिक विज्ञान को ग्राह्य हो सकता है, क्योंकि वह लगभग वहाँ पहुँच गया है। विज्ञान किस ओर जा रहा है, यह क्या तुम नहीं देख सकते ?" (२/ ९५) 
अग्निर्यथैको भुवनं प्रविष्टो रूपं रूपं प्रतिरूपो बभूव।
Just as the fire (Energy) , though one, entering the world (Matter) assumes different forms, so also That remains as the Antarätmä in each being, and remains outside also. (कठ.उपनिषद II.2.9) This will be the religion of the future, and if we can work it out, we may be sure that it will be for all times and peoples.
==========